Car and truck collision: গাড়ি ও ট্রাকের সংঘর্ষ, মার্কিন মুলুকে পুড়ে মৃত্যু ৪ ভারতীয়ের

এই দিনকাল: মার্কিন মুলুকে ভয়াবহ গাড়ি দুর্ঘটনায় (Car and truck collision) পুড়ে মৃত্যু ৪ ভারতীয়ের (Indian Family)। নিহতরা একই পরিবারের বলে জানা গিয়েছে। সোমবার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ডালাসে একটি ট্রাক তাঁদের গাড়িতে ধাক্কা দেওয়ার ফলে এই দুর্ঘটনা ঘটেছে। নিহতদের মধ্যে দুই শিশুও রয়েছে। 

সংবাদ মাধ্যম সূত্রে খবর, হায়দরাবাদের বাসিন্দা তেজস্বিনী এবং শ্রী ভেঙ্কট। ছুটি কাটাতে দুই সন্তানকে নিয়ে পরিবারটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ছুটি কাটাতে গিয়েছিল। গত সপ্তাহে তাঁরা গাড়ি চালিয়ে আত্মীয়দের সঙ্গে দেখা করতে আটলান্টায় গিয়েছিল। সেখান থেকে ডালাসে ফিরে আসার সময় এই ঘটনাটি ঘটে। ভারতীয় পরিবারটির গাড়ি যখন গ্রিন কাউন্টিতে আসে, সেই সময় রাস্তার ভুল দিক থেকে একটি মিনি-ট্রাক চলে আসে। দুটি গাড়ির মুখোমুখি সংঘর্ষের ফলে গাড়িটিতে আগুন ধরে যায়। যার ফলে ভিতরে আটক অবস্থায় চার জনেরই মৃত্যু হয়। গাড়িটি ভস্মীভূত হয়ে যাওয়ার পর, স্থানীয় প্রশাসনের তরফে নিহতদের দেহাবশেষ ফরেনসিক পরীক্ষার জন্য পাঠিয়েছে। মৃতদেহ শোকাহত পরিবারের কাছে হস্তান্তরের আগে নিহতদের ডিএনএ পরীক্ষা করা হবে বলে জানানো হয়েছে। 

উল্লেখ্য, এর আগে ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বরে, ডালাসের কাছে টেক্সাসের আন্নায় একাধিক যানবাহনের সংঘর্ষে চার ভারতীয় নাগরিকের মর্মান্তিকভাবে পুড়ে মৃত্যু হয়েছিল। তাঁরা গাড়ি চালিয়ে যখন যাচ্ছিলেন, ঠিক তখনই একটি দ্রুতগামী ট্রাক তাদের গাড়িটিকে পিছন থেকে ধাক্কা দেয়। যার ফলে গাড়িতে আগুন ধরে যায়। নিহতদের নাম আরিয়ান রঘুনাথ ওরামপতি, ফারুক শেখ, লোকেশ পালাচারলা এবং দর্শনিনী বাসুদেবন। তার আগে ২০২৪ সালের আগস্টে টেক্সাসে একটি গাড়ি দুর্ঘটনায় এক ভারতীয় বংশোদ্ভূত দম্পতি এবং তাদের মেয়ে নিহত হয়েছিলেন। যার মধ্যে তাঁদের কিশোর ছেলেই একমাত্র বেঁচে যায়। অন্য একটি গাড়ির ধাক্কায় তাদের গাড়িতেও আগুন ধরে গিয়েছিল।

witchcraft: ডাইনি সন্দেহে একই পরিবারের ৫ জনকে জীবন্ত পুড়িয়ে মারল গ্রামবাসী

এই দিনকাল: একুশ শতকে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির উন্নত যুগে এসেও কুসংস্কারের বশবর্তী হয়ে একই পরিবারের পাঁচ জনকে জীবন্ত পুড়িয়ে মারল গ্রামবাসী। ডাইনি (witchcraft) সন্দেহে তাঁদেরকে পুড়িয়ে হত্যা করা হয়েছে বলে অভিযোগ। ঘটনাটি ঘটেছে বিহারের পূর্ণিয়ায়। নৃশংস এই ঘটনার তদন্তে নেমে ইতিমধ্যে দুই জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। 

সংবাদ মাধ্যম সূত্রে খবর, রবিবার গভীর রাতে পূর্ণিয়ার তেতগামা গ্রামে ৫০ জনের একটি দল সীতা দেবীর বাড়িতে ঢুকে হামলা চালায়। অভিযোগ, সীতা নামের ওই মহিলা ‘কালা জাদু’ করেন। মহিলার ছেলে, ১৬ বছর বয়সী সোনু কুমার, পুলিশকে বলেছে উত্তেজিত জনতা বাড়িতে ঢুকে সকলকে মারধর করতে শুরু করে। প্রাণ বাঁচাতে সে পালিয়ে এক আত্মীয়ের বাড়িতে আশ্রয় নেয়।

সাংবাদিকদের সোনু বলে, ‘গ্রামের লোকেরা বাঁশের লাঠি নিয়ে এসে সবাইকে মারধর করে, আমার মাকে ‘ডাইনি’ বলে অপবাদ দেয়। তারা আমার মা, বাবা, ভাই এবং শ্যালিকা-সহ পাঁচ জনকে মারধর করে। অন্যান্য গ্রামবাসীরা তাদের থামায়নি।’ সোনুর বাবা-মা সহ পাঁচ জনকেই জীবন্ত পুড়িয়ে তাদের মৃতদেহ জলাশয়ে ফেলে দেয়। পূর্ণিয়া মহকুমা পুলিশ কর্মকর্তা পঙ্কজ কুমার শর্মা জানিয়েছেন, সোনু সোমবার পুলিশে অভিযোগ দায়ের করেছে। তিনি বলেন, ‘সোনু কুমার জানিয়েছে ‘ডাইনি’ সন্দেহে তার পরিবারের সদস্যদের মারধর করে পুড়িয়ে ফেলা হয়েছে এবং তাদের মৃতদেহ ফেলে দেওয়া হয়েছে। আমরা মৃতদেহগুলি উদ্ধার করেছি।’

এই হত্যাকাণ্ডের পিছনে কী কারণ রয়েছে, সে বিষয়ে জানতে চাইলে ওই পুলিশ কর্তা বলেন, রামদেব ওরাওঁ নামে এক গ্রামবাসীর এক ছেলে সম্প্রতি মারা গিয়েছে। তার আর এক ছেলে গুরুতর অসুস্থ। গ্রামবাসীরা এর জন্য সীতা দেবীকে দায়ী করেছেন। এই ঘটনায় জড়িত থাকায় দুই জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে জানান তিনি। দোষীরা কেউ ছাড় পাবে না বলে মন্তব্য করেন পঙ্কজ কুমার শর্মা।

মৃত্যুভয়

মতিলাল দাস 

মৃত্যু মানে একটা অন্ধকার ঘর, যেখান থেকে কেউ ফিরে আসে না।

দরজার ওপারে কেমন জানি সুর বাজে, শুনি অথচ বুঝি না।

আমি বেঁচে থাকি নিঃশ্বাসে নিঃশ্বাসে, কিন্তু মৃত্যুভয় আমার শোবার পাশে বসে।

রাত হলে ওর পা টের পাই, বিছানার নিচে, খুব ধীরে ঘোরে।

জানালা খুললে আলো আসে, 

কিন্তু মনে হয় ওর চোখও তাকিয়ে আছে।

মাথার ভেতর একেকদিন কুয়াশা জমে যায়,

জীবন আর মৃত্যু, দুই বন্ধু যেন, লুকোচুরি খেলছে।

জন্মদিনে কেক কাটার শব্দে কাঁটা হয়ে যায় বুক।

কেউ বলে—মৃত্যু শান্তি, কেউ বলে শূন্যতা,

আমি শুধু দেখি কাঁপা কাঁপা পায়ে একটা ছায়া হেঁটে যায়।

এই শহরের ট্রাফিক সিগনালে দাঁড়িয়ে থাকা মুখগুলোও জানে,

আজকেও কেউ না কেউ হারিয়ে যাবে,

চুপিচুপি, একটুও শব্দ না করে।

আমি আয়নায় তাকিয়ে থাকি, 

দেখি চোখের কোণে এক অচেনা ক্লান্তি।

জীবন চিৎকার করে বাঁচতে চায়, অথচ

মৃত্যুভয় কানে ফিসফিস করে—

“আমি খুব নরম পায়ে আসবো, প্রস্তুত হও।”

তারপর ঘুম ভেঙে দেখি, আমার ছায়াটাও কাঁপছে।

West Bengal BJP : তৃণমূলকে সরাতে বাম কংগ্রেসের হাত ধরতে চায় বঙ্গ বিজেপি! কটাক্ষ শতরূপ, অধীরের

এই দিনকাল: রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেসকে (TMC) ক্ষমতা থেকে সরাতে বাম ও কংগ্রেসের হাত ধরতে চায় পশ্চিমবঙ্গ বিজেপি (West Bengal BJP)! রবিবার শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের জন্মদিবস উপলক্ষে কলকাতার রেড রোডে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে এমন বার্তা দেন রাজ্য বিজেপির নয়া সভাপতি শমীক ভট্টাচার্য।

রবিবার শমীক ভট্টাচার্য সিপিএম ও কংগ্রেস নেতৃত্বের উদ্দেশে বলেন, ‘নিজের মতাদর্শ সরিয়ে রেখে শ্যামাপ্রসাদের প্রস্তাবে ভোট দিয়েছিলেন জ্যোতি বসু। এটা পশ্চিমবঙ্গ রক্ষার লড়াই। ইন্দিরা গান্ধীর হাতে সব অস্ত্র তুলে দিয়েছিলেন অটল বিহারি বাজপেয়ী। আজকের লড়াইটাও রাজনীতির উর্ধ্বে ওঠার লড়াই। জ্যোতি বসুকে সম্মান করলে তাঁর গড়া পশ্চিমবঙ্গকে রক্ষা করতে এগিয়ে আসুন।’ বিজেপি সভাপতির এমন মন্তব্যের স্বাভাবিক ভাবে বিরোধিতা করেছে কংগ্রেস ও সিপিএম। এ বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে কংগ্রেস নেতা অধীর চৌধুরী বলেন, বিজেপি হিন্দুরাষ্ট্র গঠন করতে চায়। কিন্তু বাংলায় না পেরে উঠে জোট বাঁধার কথা বলছে। বরং বিজেপির বিরুদ্ধে সবার ঐক্যবদ্ধ হওয়া উচিৎ বলে মন্তব্য করেন তিনি।

শমীক ভট্টাচার্যের কথার প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন সিপিএম নেতা শতরূপ ঘোষ। তিনি বলেন, জ্যোতি বসু বিজেপিকে অসভ্য ও বর্বরদের দল বলতেন। প্রয়াত বর্ষীয়াণ মুখ্যমন্ত্রীর দেখানো পথেই অসাম্প্রদায়িক বাংলা রক্ষা করতে হবে বলে মন্তব্য করেন তরুণ বাম নেতা। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী হিন্দু ভোট এক করার লক্ষ্যে হিন্দুদের জোট বাঁধার বার্তা আগে থেকেই দিয়ে আসছেন। শমীক ভট্টাচার্য সভাপতি হয়ে হিন্দু ও মুসলিম ভোট পদ্ম শিবিরের দিকে টানার চেষ্টা করছেন।

Shahi Idgah Mosque: শ্রীকৃষ্ণ জন্মভূমি ও শাহি ঈদগাহ মসজিদ মামলায় বড় নির্দেশ এলাহাবাদ হাইকোর্টের

এই দিনকাল: মথুরার শ্রীকৃষ্ণ জন্মভূমি (Krishna Janmabhoomi) এবং শাহি ঈদগাহ মসজিদ (Shahi Idgah Mosque) নিয়ে চলমান আইনি লড়াইয়ে বড় নির্দেশ দিল এলাহাবাদ হাইকোর্ট (Allahabad HC)। শ্রীকৃষ্ণ জন্মভূমি প্রাঙ্গণে অবস্থিত শাহি ঈদগাহ মসজিদকে ‘বিতর্কিত কাঠামো’ হিসেবে ঘোষণা করার আর্জি জানিয়েছিল হিন্দু পক্ষ। শুক্রবার এলাহাবাদ হাইকোর্ট সেই আর্জি খারিজ করে দিয়েছে।

বিচারপতি রাম মনোহর নারায়ণ মিশ্রের সিঙ্গল বেঞ্চ এদিন মৌখিকভাবে হিন্দু পক্ষের আবেদনটি খারিজ করে দিয়ে বলেছে, হিন্দু পক্ষের এই আবেদনটি ‘এই পর্যায়ে’ খারিজ করা হচ্ছে। আদালতের এদিনের মন্তব্য দীর্ঘ দিনের আইনি লড়াইয়ে মামলাকারী মুসলিম পক্ষকে স্বস্তি দিয়েছে। উল্লেখ্য, হিন্দু পক্ষের হয়ে আদালতে মামলা করেছিলেন আইনজীবী মহেন্দ্র প্রতাপ সিং। চলতি বছরের ৫ মার্চ একটি আবেদন করেছিলেন তিনি, সেই আবেদনে শাহি ঈদগাহ মসজিদকে ‘বিতর্কিত কাঠামো’ হিসেবে ঘোষণা করার আর্জি জানিয়েছিলেন। আবেদনকারীর যুক্তি ছিল, মসজিদটি জায়গা দখল করে তৈরি করা হয়েছে। শুধু তাই নয় মালিকানা প্রমাণের জন্য বা ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান প্রমাণের জন্য আইনি নথিপত্রের অভাব রয়েছে।

হিন্দু পক্ষ দাবি করেছিল যে জমির মালিকানার নথি, পৌর রেকর্ড বা কর দাখিলের নথি নেই। তাই কাঠামোটিকে মসজিদ বলা যাবে না। এখনও পর্যন্ত সিঙ্গল বেঞ্চে চারটি শুনানি হয়েছে। এই আবেদন ছাড়াও, হিন্দু পক্ষের দায়ের করা আরও ১৮টি এই সংক্রান্ত আবেদন হাইকোর্ট একত্রিত করেছে। সেগুলি বর্তমানে আদালতে বিচারাধীন রয়েছে। সমস্ত আবেদনই মূলত শ্রী কৃষ্ণ জন্মভূমি মন্দিরের প্রাঙ্গণ থেকে শাহী ঈদগাহ মসজিদকে অপসারণ করার দাবিতে।

হিন্দু আবেদনকারীদের অভিযোগ, মসজিদটি যেখানে অবস্থিত সেই জমিটি মূলত কৃষ্ণ মন্দিরের জায়গা ছিল।অযোধ্যা বিরোধের সঙ্গে এর মিল থাকায় তারা এই মসজিদটিকে বাবরি মসজিদের মতো ‘বিতর্কিত কাঠামো’ হিসেবে ঘোষণা করার আর্জি জানিয়েছিল। অন্য দিকে, মুসলিম পক্ষ হিন্দু হিন্দু পক্ষের আবেদনটিকে সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন বলে দাবি করে। তারা জোর দিয়ে বলে যে শাহি ঈদগাহ গত ৪০০ বছরেরও বেশি সময় ধরে বিদ্যমান।

যে ভাষা মায়ের ছিল

শুভজিৎ দত্তগুপ্ত

নবগ্রাম স্টেশন থেকে পঞ্চাশ মিনিট হাঁটলেই এক গ্রাম—বোরোডাঙা। এখন লোকজন চেনে না খুব একটা, কারও কারও কাছে পরিচিত “ওই ক্যানেলের পাড়ের পাড়া” নামে। কিন্তু এক সময় এই পাড়াতেই ছিল বাউলতলা, চড়কমঞ্চ, শখের যাত্রাদল আর জলখেলা-ভাটিয়ালির রেওয়াজ।

সেই পাড়ারই এক মাটির দালানবাড়িতে থাকতেন সুবর্ণা রায়—সবার মুখে “সুবোদি”।

গায়ের গা-লাগা এক অদ্ভুত সুরে কথা বলতেন তিনি, যেটা একদিকে পুরনো রাঢ়বঙ্গীয় উপভাষার ছোঁয়া, অন্যদিকে ব্যক্তিগত আবেগ ও অভ্যাসে গড়া নিজস্ব কণ্ঠসংস্কৃতি। সে ভাষায় ‘পিঠে’ হয় ‘ফিটা’, ‘ছেলে’ হয় ‘ভোবা’, ‘ভাত’ হয় ‘ভোত’—আর এই ভাষায় মা ডাকে যেমন, বকেও তেমন।

তাঁর ছেলে অভিমন্যুর ডাকনাম ছিল সেই টানেই—ভোবা।

সুবর্ণার মুখে এই ভাষাই ছিল ভালোবাসার কণ্ঠস্বর। তিনি বলতেন,

“ভোবা আয় রে, গরুর গোয়াল থেকে দুধ আনবি, মা ভাত গরম করে রাখছি।”

অভিমন্যু বড় হতে হতে শহরের স্কুলে ভর্তি হল। সেখানে শিক্ষক বলতেন, “শুদ্ধ বাংলা চর্চা করো, গ্রাম্য টান বাদ দাও।”

একদিন স্কুল থেকে ফিরে ছেলে মাকে বলল, “তুমি এমনভাবে বলো না তো মা, সবাই হাসাহাসি করে।”

সুবর্ণা মুচকি হেসে বলেছিলেন, “তুই যেমন আমাকে ডাকিস, সেই ডাকটাই তো আমি তোকে দিয়েছিলাম রে। এখন তুই ভুলে গেলি, আমি তো পারলাম না।”

তবে অভিমন্যু ভুলে গেল। উচ্চশিক্ষা, বড় চাকরি, মহানগর—সব মিলিয়ে তার ভাষা পাল্টে গেল, তার টান পাল্টে গেল, এমনকি তার নামও—অভিমন্যু হয়ে উঠল ‘অভি’।

সুবর্ণা থেকে গেলেন গ্রামে—পুরনো পাটকাঠির বিছানায়, খুপরি জানালার ধারে, যেখানে শিউলি গাছ থেকে রোজ ঝরে পড়ত সকালের সাদা রোদ।

দিন গড়াল। বছর পেরোল। ছেলের ব্যাঙ্গালোরে চাকরি, বিয়েশাদি, সংসার। মায়ের সঙ্গে ফোনে বাংলা নয়, ইংরেজি বা ‘নির্জীব শহুরে কথা’।

কিন্তু সুবর্ণা কথা বলে যেতেন নিজের ভাষায়। কারও সঙ্গে না হোক, নিজের সঙ্গেই—এক খাতা ভরে উঠত তাঁর লেখায়—

“ভোবা, তুই ফিরে আসবি তো? এই মাটির গন্ধ তোকে ডাকবেই—ফিটায় রোদ পড়েছে, গোয়ালে গরু দুধে ভেসে গেছে…”

যখন অসুস্থ হলেন সুবর্ণা, তখনো ছেলে এল না। অফিসের চাপ, মেয়ের টেস্ট, ফ্লাইট পাওয়া যায়নি।

একদিন প্রাইমারি স্কুলের দিদিমণির হাতে একটি চিঠি দিয়ে বললেন, “ভোবার জন্য রেখে দেবেন। যদি একদিন আসে…”

পরদিন ভোরে সুবর্ণা চিরঘুমে চলে গেলেন।

মাসখানেক পরে অভিমন্যু এল। বাড়ির উঠোনে ফাটল, কাঁথার রোদ নেই, গন্ধ নেই।

পুরনো কাঠের আলমারিতে একটা মাটির হাঁড়ির ভিতর খুঁজে পেল সেই চিঠি—

মায়ের হাতের লেখা, মা-র ভাষায়—

“ভোবা, তুই এখন বড় হইছিস। তোর ভাষাও বড় হইছে।

আমি পুরনো হইয়া গেছি, তোকে আর ডাকি না।

তোর নাম নাকি এখন অভিমন্যু বাবু।

কিন্তু আমি তোকে ‘ভোবা’ বলেই ডাকব যতদিন থাকি।

যেদিন আর থাকব না, তখন তোকে আর কেউ এই ভাষায় ডাকবে না।

ভাষা ফুরায়, মানুষ যায়—

কিন্তু মনে রইয়া যায় সেই ডাক,

যেটা কেবল মায়ের মুখেই ছিল।”

চিঠিটা পড়তে পড়তে অভিমন্যুর বুক ভেঙে এল।

কতদিন কেউ তাকে “ভোবা” বলে ডাকে না। এখন সে শুধু “স্যার”, “বাবা”, “বস”, “ড্যাড”…

আজ অভিমন্যু একটি গবেষণা কেন্দ্র গড়ে তুলেছে বর্ধমানেই—নাম দিয়েছে “ভোবার ভাষা”।

সেখানে সংগ্রহ হয় বাংলার বিভিন্ন মায়েদের মুখে মুখে থাকা হারিয়ে-যাওয়া উপভাষা, লোকবলির টান, পাড়ার ডাকনাম, এবং সেই পুরনো ছায়া—যেটা বইয়ে নেই, অভিধানে নেই, শুধু হৃদয়ের মাটিতে লেখা।

অভিমন্যু বলে—

“ভাষা শুধু যোগাযোগ নয়, ভাষা হল স্মৃতি।

যে ভাষা মায়ের ছিল, সেটাই পৃথিবীর প্রথম শব্দ।

সেই শব্দ যখন হারিয়ে যায়, একটা জাতি নিজের শিকড় হারায়।

আর আমি? আমি শুধু আমার মায়ের মুখের ভাষাটা ধরে রাখতে চাই—

কারণ ওটাই ছিল আমার পৃথিবী।”

Samik Bhattacharya: ‘বিজেপির কাছে মুসলিমরা অচ্ছুৎ নয়’, দায়িত্ব নিয়েই বার্তা শমীকের

এই দিনকাল: পশ্চিমবঙ্গ বিজেপির (BJP) রাজ্য সভাপতি হয়ে ছক ভাঙা বার্তা শমীক ভট্টাচার্যের (Samik Bhattacharya)। বৃহস্পতিবার রাজ্য সভাপতি (West Bengal State President) হিসেবে শমীক ভট্টাচার্যের নাম ঘোষণা করা হয় আনুষ্ঠানিক ভাবে। নয়া দায়িত্ব পাওয়ার পর তাঁর প্রথম ভাষণে তাৎপর্যপূর্ণ বার্তা দিলেন বিজেপি নেতা। এদিন বক্তৃতায় হিন্দু-মুসলিম ঐক্যের বার্তা দেন তিনি। গেরুয়া শিবিরে যা কার্যত অভাবনীয় বলে মত রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের।

বঙ্গ বিজেপিতে সুবক্তা হিসাবে সুপরিচিত শমীক ভট্টাচার্য। রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘের সঙ্গে তিনি দীর্ঘ দিন ধরে যুক্ত। অথচ কেবলই হিন্দু ঐক্যের বার্তা না দিয়ে তিনি হিন্দু-মুসলমান সসম্প্রীতির বার্তা দিয়ে গেরুয়া শিবিরের রাজনীতিতে নতুন ভাষ্য তৈরি করতে চাইছেন বলে মত পর্যবেক্ষকদের। প্রসঙ্গত সাম্প্রতিক কালে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী একাধিক বার হিন্দুদের জোট বাঁধার বার্তা দিয়েছেন। সেই পথে না হেঁটে সংখ্যালঘুদের নিয়ে চলার বার্তা দিয়ে রাজ্য রাজনীতিতে তাৎপর্যপূর্ণ ইঙ্গিত নয়া রাজ্য সভাপতির। 

মুসলিমরা যে বিজেপির কাছে অচ্ছ্যুৎ নয়, এদিন সভাপতি নির্বাচিত হওয়ার পর তাঁর প্রথম ভাষণে বুঝিয়ে দিয়েছেন শমীক ভট্টাচার্য। তিনি বলেন, ‘দিনের পর দিন একটা সাম্প্রদায়িক বিভাজন তৈরি করে দেওয়া হয়েছে রাজ্যের মাটিতে। আজকে সংখ্যালঘুদের বুঝতে হবে। যে বিজেপির লড়াই সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে নয়। বিজেপির লড়াই কোনও মুসলমানের বিরুদ্ধে নয়। আমাদের লড়াই হল আপনাদের বাড়ির ছেলেরা যারা পাথর হাতে নিয়ে ঘুরছে আমরা ওই পাথরটাকে কেড়ে নিয়ে ওখানে বই ধরিয়ে দিতে চাই। যারা তলোয়ার নিয়ে নেমেছে আমরা ওই তলোয়ার কেড়ে নিয়ে তাদের হাতে কলম ধরিয়ে দিতে চাই। এটা পশ্চিমবঙ্গে বিজেপি করে দেখাবে। আমরা চাই দুর্গাপুজোর বিসর্জন আর মহরমের মিছিল একই সময় একই রাস্তা দিয়ে একই সময় হেঁটে যাবে। কোনও সংঘর্ষ নেই, কোনও দাঙ্গা নেই। কোনও রাজনৈতিক সম্প্রীতির বিভাজন নেই। পশ্চিমবঙ্গকে বাঁচাতে হবে, এর বহুত্ববাদকে বাঁচাতে হবে। এই মাটিকে রক্ষা করতে হবে।’

এদিন শমীক ভট্টাচার্য সংখ্যালঘু সমাজের উদ্দেশ্যে প্রশ্ন করেন, ‘বাংলার সংখ্যালঘু ভাই বোনেরা সৈয়দ মুস্তাফা সিরাজ, সৈয়দ মুজতবা আলি, এস ওয়াজেদ আলি, নজরুলের কথা শুনবে, না কোনও উগ্রপন্থীর ভাষা শুনবে। হুমায়ুন কবিরের বক্তব্যকে গ্রহণ করবে?’

তাঁর আরও সংযোজন, ‘দেখুন রাজ্যের দিকে তাকিয়ে। মরছে মুসলমান, মারছে মুসলমান, কারা এই অবস্থা তৈরি করল? আপনারা মনে করলে বিজেপিকে ভোট দেবেন না, কিন্তু আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে নিজেকে প্রশ্ন করুন, গত ৩ বছরে পশ্চিমবঙ্গে যত খুন হয়েছে তার মধ্যে মুসলমানের সংখ্যা কত। ৯০ শতাংশ মুসলমান খুন। মরছে মুসলমান, মারছে মুসলমান। আর তাদের পরিবার বলছে সিবিআই তদন্ত চাই।’

বিশ্বাস

দেব মাইতি

আমি মায়ের অংক মেলাতে পারিনি
মাকে বললাম
শূন্যের আগে কিছু না কিছু সংখ্যা হয়
মা বুঝতে পারেনি

বাবা মানে যখন ঈশ্বর বুঝলাম
ততদিনে বাবা ঈশ্বর হয়ে গেছে

আর যতক্ষণে তুমি বুঝলাম
নদীতে শুশুক বিরল

আর বাচ্চারা ইতিহাস পড়ছে ভূগোল বিজ্ঞান
কোন স্ট্যাচুই তাদের সাথে কথা বলছে না

পৃথিবীটা ছোটো বড় রাক্ষসের মুখ বুঝতে না পেরে তারা খেলছে খেলছে আর খেলছে খেলতে খেলতে

ক্রমশ ভেতর দিকে ঢুকে যাচ্ছে

এই সেদিন যেমন স্কুল যাবার পথে লরির নিচে ডান হাত কাটা গেল বাচ্চা মেয়েটার

আমার একটা বিশ্বাস চাই, যে রকম বিশ্বাসে খালি হাতে বেরোনো মানুষ হাসি নিয়ে ফিরে আসে সংসারে

Kidnapped: মালিতে আল-কায়েদা ঘনিষ্ঠ জঙ্গিগোষ্ঠীর হামলার মাঝে অপহৃত ৩ ভারতীয়

এই দিনকাল: পশ্চিম আফ্রিকার দেশ মালিতে তিন ভারতীয়কে অপহরণ (Kidnapped) করা হয়েছে। এই ঘটনায় বুধবার গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ভারত। অপহৃতদের ‘নিরাপদ এবং দ্রুত’ মুক্তি নিশ্চিত করার জন্য প্রয়োজনীয় সকল ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য এদিন নয়াদিল্লির তরফে মালি সরকারের কাছে আহ্বান জানানো হয়েছে।

সংবাদ মাধ্যম সূত্রে খবর, যে তিন ভারতীয়কে অপহরণ করা হয়েছে, তাঁরা কায়েসের ডায়মন্ড সিমেন্ট কারখানায় কর্মরত ছিলেন। ভারতের বিদেশ মন্ত্রকের তরফে জানানো হয়েছে, ঘটনাটি ঘটেছে ১ জুলাই। একদল সশস্ত্র হামলাকারী কারখানা প্রাঙ্গণে আক্রমণ চালায় এবং তিন জন ভারতীয় নাগরিককে জোর করে জিম্মি করে। এখনও পর্যন্ত কেউ অপহরণের দায় স্বীকার করেনি। তবে আল-কায়েদার সহযোগী জামাত নুসরাত আল-ইসলাম ওয়াল-মুসলিমিন (জেএনআইএম) মঙ্গলবার মালিতে হামলার দায় স্বীকার করেছে। বিদেশ মন্ত্রকের তরফে জানানো হয়েছে, বামাকোতে অবস্থিত ভারতীয় দূতাবাস সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ, স্থানীয় প্রশাসন এবং ডায়মন্ড সিমেন্ট কারখানার কর্তৃপক্ষের সঙ্গে নিবিড় এবং ধারাবাহিক ভাবে যোগাযোগ রাখছে। পাশাপাশি অপহৃতদের পরিবারের সঙ্গেও যোগাযোগ রাখছে বিদেশ মন্ত্রক।

একটি বিবৃতিতে বিদেশ মন্ত্রক বলেছে, ‘ভারত সরকার দ্ব্যর্থহীনভাবে এই নিন্দনীয় সহিংসতার নিন্দা জানায় এবং মালি প্রজাতন্ত্রের সরকারকে অপহৃত ভারতীয় নাগরিকদের নিরাপদ এবং দ্রুত মুক্তি নিশ্চিত করার জন্য প্রয়োজনীয় সকল ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানায়।’ বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, ‘মন্ত্রকের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছেন এবং ভারতীয় নাগরিকদের নিরাপদ এবং দ্রুত মুক্তি নিশ্চিত করার জন্য বিভিন্ন স্তরে নিয়োজিত রয়েছেন।’

Kasba Rape Case: ধর্ষণ কাণ্ডের পর অনির্দিষ্ট কালের জন্য বন্ধ করে দেওয়া হল কসবার ল কলেজ!

এই দিনকাল: গত ২৫ জুন কসবার সাউথ ক‍্যালকাটা ল কলেজে ধর্ষণের (Kasba Rape Case) ঘটনা ঘটেছে। অভিযুক্তরা রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেসের ছাত্র সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত ছিল। ইতিমধ্যে রাজ্য রাজনীতিতে শোরগোল ফেলে দিয়েছে কসবার ল কলেজে ছাত্রীকে ধর্ষণের এই ঘটনা। এই আবহে এবার কলেজ কর্তৃপক্ষ অনির্দিষ্ট কালের জন‍্য বন্ধ করে দিলেন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি। রবিবার এক বিজ্ঞপ্তি দিয়ে এমনটাই জানানো হয়েছে। 

সাউথ ক‍্যালকাটা ল কলেজের তরফে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির ওয়েবসাইটে বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানানো হয়েছে আপাতত কলেজ বন্ধ থাকবে। গভর্নিং বডির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সমস্ত বিএ.এলএলবি ও এলএল.এম ক্লাস বন্ধ থাকবে বলে জানানো হয়েছে। একই সঙ্গে কলেজ চত্বরে পড়ুয়াদের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। পরবর্তী নোটিস না দেওয়া পর্যন্ত এই সিদ্ধান্ত বহাল থাকবে।

উল্লেখ্য, নিরাপত্তার দাবি নিয়ে সোমবার কলেজ ক্যাম্পাসে এসেছিল পড়ুয়াদের একাংশ। উপাচার্যের সঙ্গে দেখা করতে চেয়ে চেয়েছিল তারা। কিন্তু অভিযোগ, উপাচার্য তাদের সঙ্গে দেখা করেনি। এদিনই শহর কলকাতার একাধিক ল কলেজের পড়ুয়া এবং প্রাক্তনীরা কসবায় জমায়েত করেছিল। তারা দুষ্কৃতীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছে। হাতে প্ল্যাকার্ড নিয়ে কসবা থানা থেকে সাউথ ক্যালকাটা ল কলেজ পর্যন্ত মিছিল করে বিক্ষোভকারীরা।