Author Archives: Ei Dinkal

Mamata Banerjee: বাঙালি নির্যাতনের প্রতিবাদে মিছিলে হাঁটলেন মমতা, সঙ্গে অভিষেক, ফিরহাদও

এই দিনকাল: দেশের একাধিক বিজেপিশাসিত রাজ্যে বাঙালি পরিযায়ী শ্রমিকদের বাংলাদেশি সন্দেহে আটক করার প্রতিবাদে মিছিলে হাঁটলেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। বুধবার কলকাতার কলেজ স্কোয়ার থেকে ডোরিনা ক্রসিং পর্যন্ত মিছিল করেন তৃণমূল নেত্রী। এদিন তাঁর সঙ্গে মিছিলে পা মেলান দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ও। মিছিলের সামনের সারিতে দেখা যায় রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম, অরূপ বিশ্বাস এবং চন্দ্রিমা ভট্টাচার্যকে।

বুধবার মিছিল শেষে বক্তৃতা দেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই ভাষণে বিজেপির বিরুদ্ধে সুর চড়ান তিনি। পাশাপাশি সম্প্রীতি ও ঐক্যের বার্তা দেওয়া হয় মিছিল থেকে। বাংলা থেকে যেমন পরিযায়ী শ্রমিক অন্য রাজ্যে কাজে যান, তেমনই ভিন রাজ্য থেকেও অনেকে বাংলায় কর্মসূত্রে আসেন। রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধান এদিন সেই বিষয়টি তুলে ধরেন। সেই সঙ্গে তিনি বলেন, তাঁদের সঙ্গে কোনও খারাপ আচরণ করা হয় না। 

এদিন ভাষণে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী অভিযোগ করেন,  কেন্দ্রীয় সরকার গোপনে একটি বিজ্ঞপ্তি বিজেপিশাসিত রাজ্যগুলিতে পাঠিয়েছে, যার ফলে বাঙালিদের উপর অত্যাচার করা হচ্ছে। তিনি বলেন, ‘ভারত সরকার একটি নোটিফিকেশন করেছে। সেই নোটিফিকেশনটা আমরা চ্যালেঞ্জ করব। লুকিয়ে লুকিয়ে করেছে এবং যেখানে যেখানে বিজেপি আছে, সেখানে পাঠিয়েছে। তাতে পরিষ্কার বলা হয়েছে, যাকেই সন্দেহ হবে, বাংলায় কথা বলে, অ্যারেস্ট করবে, ডিটেনশন ক্যাম্পে রেখে দেবে।’

বুধবারের মিছল শেষে নিজের ফেসবুক পেজেও একটি পোস্ট করেছেন তৃণমূলের সর্বোচ্চ নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানে তিনি লিখেছেন, ”বাংলা ভাষার অপমান – বাংলার অপমান’ তা স্মরণে রাখতে হবে বাংলা-বিরোধীদের। বিজেপি-শাসিত রাজ্যগুলিতে বাংলাভাষী শ্রমিকদের উপর অমানবিক অত্যাচার, নিপীড়ন এবং ‘বাংলাদেশি’ আখ্যা দিয়ে তাঁদের আটক করা হচ্ছে। বৈধ নথি থাকা সত্ত্বেও বাংলার শ্রমিকদের হয়রানি করা হচ্ছে।’

তাঁর আরও সংযোজন, ‘বাংলা-বিদ্বেষ এই মনোভাবের বিরুদ্ধে আজ, কলেজ স্কোয়ার থেকে ডোরিনা ক্রসিং পর্যন্ত মহামিছিলে এবং প্রতিবাদ সভায় উপস্থিত ছিলাম। এরই সঙ্গে ‘শহিদ স্মরণে’ একুশে জুলাই-এর আমন্ত্রণ জানালাম বাংলার আপামর জনগণকে। আমি চুপ থাকব না, যতক্ষণ না বিজেপি এই বিভাজনের রাজনীতি বন্ধ না করবে। তাদের অপপ্রচার-কুৎসার বিরুদ্ধে জবাব দেওয়ার সময় এসেছে। বাংলার ভূমিতে জন্ম নিয়েছেন হাজার বিপ্লবী – মনীষী। স্বাধীনতা সংগ্রামে শহিদ হয়েছেন হাজার হাজার বাঙালি। তাঁদের মহান কর্মের মাধ্যমে ভারতবর্ষকে তুলে ধরেছেন  বিশ্বের আঙিনায়, সেই বাংলার মাটিকে অপমান আমি মেনে নেব না। আমরা সব ভাষাকে শ্রদ্ধা এবং সম্মান করি, তবুও বারবার আঘাত নেমে আসে বাংলার উপর। বাংলাকে আঘাত করলে, বাংলা-বিরোধীদের বিরুদ্ধে শোনা যাবে বাংলার গর্জন! কৃষক-বিরোধী, দলিত-বিরোধী, নারী-বিরোধী, ভাষা-বিরোধী শক্তিকে বাংলা থেকে আগেও পরাজিত করেছে তৃণমূল কংগ্রেস। আগামী ২৬-এর নির্বাচনেও একই অবস্থা করবে বাংলার মানুষ।’

Nimisha Priya: ইয়েমেনে কেরলের নার্স নিমিশা প্রিয়ার মৃত্যুদণ্ড স্থগিত

এই দিনকাল: আগামী ১৬ জুলাই ইয়েমেনে বন্দি ভারতীয় নার্স নিমিশা প্রিয়ার (Nimisha Priya) মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার কথা ছিল। তার ২৪ ঘন্টা আগে সাময়িক স্বস্তি পেলেন ওই নার্স। ইয়েমেনে ওই ভারতীয় নার্সের মৃত্যুদণ্ড স্থগিত করা হল।

সংবাদ মাধ্যম সূত্রে খবর, ইয়েমেনের স্থানীয় কর্তৃপক্ষ মৃত্যুদণ্ড সাময়িক ভাবে স্থগিত করতে রাজি হয়েছেন। বিভিন্ন মহল থেকে লাগাতার কূটনৈতিক চেষ্টার পর এটি সম্ভব হয়েছে বলে খবর। নিমিশার মৃত্যুদণ্ড স্থগিত হওয়ার পিছনে কেরলের এক মুসলিম ধর্মীয় নেতা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন। যাকে খুন করার অভিযোগ নিমিশার বিরুদ্ধে, ইয়েমেনের সেই ভুক্তভোগীর পরিবারকে তিনি ব্লাড মানি গ্রহণে রাজি করাতে সাহায্য করেছেন। সূত্র জানিয়েছে, ‘ঘটনার শুরু থেকেই ভারত সরকার সম্ভাব্য সকল সহায়তা করছে। সম্প্রতি ইয়েমেনে ভুক্তভোগীর পরিবারের সঙ্গে নিমিশা প্রিয়ার পরিবার যাতে পারস্পরিক সম্মতিতে একটি সমাধানে পৌঁছয়, সেই উদ্দেশ্যে আরও সময় চাওয়ার জন্য চেষ্টা চালিয়েছে।’

ইনস্টাগ্রাম পোস্টে এক বার্তায়, সুন্নি মুসলিম ধর্মীয় নেতা কাঁথাপুরম এপি আবুবকর মুসলিয়ার জানিয়েছেন, প্রার্থনা শোনা হয়েছে। তিনি উল্লেখ করেছেন, নিমিশা প্রিয়ার মৃত্যুদণ্ড স্থগিত রাখার নির্দেশের একটি কপি সরকারি ভাবে গৃহীত হয়েছে। তিনি বলেন, যারা নিমিশার মৃত্যুদণ্ড রোধ করতে কাজ করেছেন এবং প্রার্থনা করেছেন তাঁদের সকলের উপর আল্লাহর আশীর্বাদ বর্ষিত হোক।

নিমিশা প্রিয়াকে কেন মৃত্যুদণ্ড?

পেশায় নার্স নিমিশা প্রিয়া ২০০৮ সালে ইয়েমেনে যান। সে দেশে বেশ কয়েকটি হাসপাতালে কাজ করেন তিনি। এক সময় নিজে ক্লিনিক খোলেন এবং ২০১৪ সালে তালাল আবদো মাহদি নামে এক ব্যক্তির সংস্পর্শে আসেন। ইয়েমেনের নিয়ম অনুসারে সে দেশে ব্যবসা করতে গেলে স্থানীয়দের সঙ্গে অংশীদারিত্ব করে তা শুরু করা বাধ্যতামূলক। মূলত সেই কারণে মাহদির সঙ্গে ব্যবসা শুরু করেন তিনি। কিন্তু কেরলের ওই নার্সের সঙ্গে মাহদির ঝগড়া হয়। তার বিরুদ্ধে অভিযোগও দায়ের করেন নিমিশা। এরপর ২০১৬ সালে মাহদিকে গ্রেফতার করা হয়। পরে তার কারামুক্তি ঘটলেও মাহদি নিমিশাকে হুমকি দিতে থাকে বলে অভিযোগ।

নিমিশার পরিবারের দাবি, মাহদি নিমিশার পাসপোর্ট কেড়ে নিয়েছিল। সেই পাসপোর্ট উদ্ধারের জন্য মাহদির উপর ঘুমের ওষুধ প্রয়োগ করেছিলেন ওই নার্স। তবে, তার ওভারডোজের কারণে মাহদির মৃত্যু হয়। এক সময় ইয়েমেন ছেড়ে পালানোর চেষ্টা করেন নিমিশা। তখনই তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। ২০১৮ সালে তাঁকে হত্যার দায়ে দোষী সাব্যস্ত করা হয়। ইয়েমেনি নাগরিককে হত্যার দায়ে সে দেশের ট্রায়াল কোর্ট নিমিশাকে দোষী সাব্যস্ত করে, যা ২০২৩ সালের নভেম্বরে দেশটির সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল বহাল রাখে।

ইয়েমেনি আইনে সেদেশের স্বাধীনতা, ঐক্য বা আঞ্চলিক অখণ্ডতা লঙ্ঘন করা, সশস্ত্র বাহিনীকে দুর্বল করার জন্য কোনও কাজ করা, খুন, মাদক পাচার, ব্যভিচার, প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে সম্মতিক্রমে সমকামী যৌন কার্যকলাপ, ইসলাম থেকে মুখ ফিরিয়ে নেওয়া বা নিন্দা করা এবং পতিতাবৃত্তিতে সহায়তা করা-সহ বিভিন্ন অপরাধের জন্য মৃত্যুদণ্ডের বিধান রয়েছে।

Durbar: দুর্বারের ৩০ বছর, যৌনকর্মীদের প্রতি দৃষ্টিভঙ্গি বদলের ডাক বিশিষ্টদের

এই দিনকাল: সমাজ এখনও মুখ বাঁকায় তাঁদের দেখলে। বিভিন্ন ক্ষেত্রে এখনও বঞ্চনার শিকার হন তাঁরা। কিন্তু অদম্য লড়াইয়ের মাধ্যমে ছিনিয়ে নিতে চান নিজেদের অধিকার। যৌনকর্মীরাও যে শ্রমিক এবং শ্রমিকের অধিকার তাঁদের প্রাপ্য, সেই দাবি আরও এক বার সোচ্চারে তুলে ধরল যৌনকর্মীদের অধিকার নিয়ে কাজ করা সংগঠন ‘দুর্বার মহিলা সমন্বয় সমিতি'(Durbar)। সমিতির ৩০ বছর পূর্তি উপলক্ষে চলছে নানান অনুষ্ঠান। সেই অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে বিশিষ্ট মানুষজনও যৌনকর্মীদের অধিকারের পক্ষে জোরালো সওয়াল করেন।

সমিতির ৩০ বছর পূর্তি উপলক্ষে উত্তর কলকাতার রবীন্দ্র সরণির রবীন্দ্র কানন পার্কে চলছে বিভিন্ন অনুষ্ঠান। ১২ জুলাই থেকে শুরু হওয়া এই উদযাপন চলবে ১৫ জুলাই পর্যন্ত। সোমবার এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন অভিনেত্রী দেবলীনা দত্ত, ছিলেন শ্রমিক সংগঠনের একাধিক নেতা। অভিনেত্রী দেবলীনা সমাজের দৃষ্টিভঙ্গি বদলের আহ্বান জানান। তিনি বলেন, ‘আমার যে অধিকার তা নিয়ে আমাকে লড়াই করতে হয় না। আমার যৌনকর্মী দিদি বোনেদের অধিকার নিয়ে আমাদের মঞ্চে বসে আলোচনা করতে হচ্ছে। এইটা যতদিন চলবে ততদিন হাজার আইন, হাজার নিয়ম, হাজার কানুন, কিছু করেই কিছু হবে না। সমাজের দৃষ্টিভঙ্গি যতক্ষণ না বদলাচ্ছে।’

oplus_0

আলোচনায় প্রত্যেকেই যৌনকর্মীদের শ্রমিক হিসেবে মর্যাদা ও অধিকারের দাবিতে সরব হন। এদিন সন্ধ্যায় আলোচনার পরেই ছিল ট্রান্সজেন্ডারদের ফ্যাশন শো। অনেকে অংশ নেন সেই শো’তে। অন্যদের মতো তাঁরাও যে সুযোগ পেলে নিজেদের প্রতিভা ও মেধার বিকাশ ঘটাতে পারেন, তা বুঝিয়ে দেন মঞ্চে। এছাড়াও অনুষ্ঠান প্রাঙ্গণে ছিল একাধিক নামী প্রকাশনীর বইয়ের স্টল। যৌনকর্মীরা ছাড়াও এই অনুষ্ঠানে দর্শকের আসনে ছিলেন বহু সাধারণ মানুষ। যৌনকর্মীদের প্রতি যে তাচ্ছিল্যের দৃষ্টিভঙ্গি এখনও চারপাশে বিদ্যমান, তা কাটাতে ভাবনা বদলের ডাক দেন বিশিষ্টরা।

Mamata Banerjee: বিজেপিশাসিত রাজ্যে বাঙালিদের হেনস্থা, প্রতিবাদে ১৬ জুলাই পথে নামবেন মমতা

এই দিনকাল: দেশের একাধিক রাজ্যে বাঙালিদের (Bengali People) উপর নির্যাতন করা হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এই পরিস্থিতি বন্ধ না হলে আওয়াজ তোলার হুঁশিয়ারি আগেই দিয়েছিলেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। এবার রাস্তায় নামার দিনক্ষণ জানিয়ে দিল রাজ্যের শাসকদল। ভিন রাজ্যে বাঙালিদের উপর নিপীড়নের প্রতিবাদে আগামী ১৬ জুলাই পথে নামবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। 

তৃণমূল সূত্রের খবর, আগামী ১৬ জুলাই, মঙ্গলবার, কলকাতায় প্রতিবাদ মিছিলে নেতৃত্ব দেবেন মুখ্যমন্ত্রী। ওই দিন মিছিলটি কলেজ স্কোয়ার থেকে শুরু হয়ে ডোরিনা ক্রসিং পর্যন্ত যাবে। প্রতিবাদ কর্মসূচি শুরু হওয়ার কথা বেলা ১টা নাগাদ। শুধু মহানগর কলকাতায় নয়, প্রতিবাদ কর্মসূচি পালিত হবে রাজ্যের জেলাগুলিতেও। রবিবার সাংবাদিক বৈঠক করে রাজ্যের মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য বিজেপিকে নিশানা করে বলেন, ‘আজ বাংলা ভাষায় কথা বললেই ভিনরাজ্যে হেনস্থার শিকার হতে হচ্ছে। বাংলা ভাষা বললেই অপমান, ডিটেনশন ক্যাম্পে পাঠানোর হুমকি! এটা কি ভারত?’ এ ছাড়া, সম্প্রতি অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা বাঙালি বিরোধী মন্তব্য করে বিতর্ক তৈরি করেছেন। তিনি বলেছিলেন, আদমশুমারিতে যারা নিজেদের মাতৃভাষা বাংলা বলছেন, তাঁরা নাকি ‘বাংলাদেশি’। যা ইতিমধ্যে দেশজুড়ে শোরগোল ফেলে দিয়েছে।

উল্লেখ্য, দিল্লিতে বাঙালি বসতিতে জল ও বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়ায় সরব হয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বৃহস্পতিবার নিজের ফেসবুক পেজে তিনি লিখেছিলেন, ‘এই দেশেই বাংলার মানুষ যদি অনাহূত অতিথির মতো আচরণের শিকার হন, তাহলে আমরা চুপ করে থাকব না। বাংলা সমস্ত নির্যাতিত কণ্ঠের পাশে দাঁড়াবে। এই অন্যায়ের বিরুদ্ধে আমরা সর্বত্র আওয়াজ তুলব।’

IIM Calcutta case: ‘ধর্ষণের’ অভিযোগ করছেন তরুণী, বাবা বলছেন দুর্ঘটনা! নাটকীয় মোড় আইআইএম-কাণ্ডে

এই দিনকাল: জোকা আইআইএম-এ (IIM Calcutta case) ‘ধর্ষণকাণ্ডে’ নাটকীয় মোড়! শুক্রবার সন্ধ্যায় পেশায় মনোবিদ এক তরুণী ধর্ষণের অভিযোগ দায়ের করেছেন পুলিশের কাছে। তবে তার ২৪ ঘন্টার মধ্যে ভিন্ন সুর ‘নির্যাতিতা’র বাবার। তরুণীর বাবা শনিবার সংবাদ মাধ্যমের কাছে দাবি করেছেন ধর্ষণের কোনও ঘটনাই ঘটেনি! তাঁর দাবি, মেয়েকে চাপ দিয়ে অভিযোগ লেখানো হয়েছে। আর এর পর থেকে এই ঘটনায় উঠে আসছে একাধিক প্রশ্ন। কে চাপ দিয়ে ধর্ষণের অভিযোগ লেখাল? কোন উদ্দেশ্যে এমন গুরুতর অভিযোগ আনা হল? যদিও এসবের কোনও জবাব তরুণীর বাবা দেননি।

পুলিশ সূত্রে খবর, তরুণীর অভিযোগের পর এমবিএ দ্বিতীয় বর্ষের এক ছাত্রকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অভিযোগ, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির বয়েজ হোস্টেলের ভেতরে তাঁকে ধর্ষণ করা হয়েছে। পেশায় মনোবিদ ওই তরুণী শুক্রবার সন্ধ্যায় হরিদেবপুর থানায় গিয়ে হাতে লিখে একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন। তাঁর অভিযোগ, ওই দিন দুপুরে খাবারের সময় তাঁকে পিৎজা এবং জল দেওয়া হয়েছিল এবং সেগুলি খাওয়ার পরপরই তিনি অসুস্থ বোধ করেন।অভিযোগকারীর দাবি, তিনি জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন এবং ঘুম থেকে ওঠার পর বুঝতে পারেন যে তাঁকে ধর্ষণ ও নির্যাতন করা হয়েছে।

তরুণীর অভিযোগের পর, কলকাতা পুলিশ কর্ণাটকের বাসিন্দা অভিযুক্ত ছাত্রের বিরুদ্ধে ভারতীয় ন্যায় সংহিতার ৬৪ (ধর্ষণ) এবং ১২৩ (মাদকদ্রব্য বা বিষ প্রয়োগ) এর অধীনে এফআইআর দায়ের করে তাকে গ্রেফতার করেছে। শনিবার বিকেলে এই ঘটনায় নয়া মোড় নেয় তরুণীর বাবার মন্তব্যের পর। সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে, ‘নির্যাতিতা’র বাবা তাঁর মেয়ের করা সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি দাবি করেছেন, কেউ তরুণীর সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করেনি, কোনও যৌন নির্যাতনের ঘটনা ঘটেনি। এমনকি ওই তরুণী অভিযুক্ত ছাত্রকে চেনেন না। তিনি বলেন, ‘সে সম্পূর্ণ সুস্থ রয়েছে এবং এখন ঘুমাচ্ছে।’

তিনি আরও বলেন, শুক্রবার রাত ৯টা ৩৪ নাগাদ তিনি একটি ফোন পান যেখানে তাঁকে জানানো হয় যে তাঁর মেয়ে একটি অটো থেকে পড়ে অজ্ঞান হয়ে গেছেন। পরে এসএসকেএম হাসপাতালের নিউরোলজি বিভাগে যান ‘নির্যাতিতার’ বাবা। সেখানে পুলিশ তরুণীকে নিয়ে গিয়েছিল।

অন্য দিকে কলকাতা পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে, ‘নির্যাতিতা’ তরুণীর লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে এফআইআর দায়ের করা হয়েছে। পুলিশ সূত্রে খবর, তরুণী প্রথমে ঠাকুরপুকুর থানায় ঘটনাটি জানাতে যান। কিন্তু আইআইএম কলকাতা ক্যাম্পাস হরিদেবপুর থানার অধীনে পড়ে। তাই এক জন মহিলা অফিসার-সহ পুলিশ তাঁকে সেখানে নিয়ে যান। এর পর তরুণী নিজেই হাতে লিখে অভিযোগ দায়ের করেন। কিন্তু শনিবার নির্যাতিতার বাবার প্রকাশ্য বিবৃতির পর গোটা ঘটনা অন্য দিকে বাঁক নিয়েছে। তরুণীর বাবার বক্তব্য খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা।

এদিকে, অভিযুক্তকে আলিপুর আদালতে হাজির করা হলে তাকে সাত দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক।

Vidyasagar University: প্রশ্নপত্র কাণ্ড: বিপ্লবীদের ‘সন্ত্রাসবাদী’ আখ্যা দেওয়ায় অধ্যাপকের শাস্তি চেয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি আইনজীবীদের

এই দিনকাল: পশ্চিম মেদিনীপুরের বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (Vidyasagar University) ইতিহাসের (History) প্রশ্নপত্রে বিপ্লবীদের ‘সন্ত্রাসবাদী’ আখ্যা দেওয়ায় বিতর্ক এখনও অব্যাহত।  এই আবহে এবার দোষী অধ্যাপকের শাস্তি চেয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি লিখলেন আইনজীবীরা। মেদিনীপুর জেলা জজ আদালতের আইনজীবীরা সম্মিলিতভাবে ওই চিঠি পাঠিয়েছেন রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধানকে।

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে পাঠানো চিঠিতে লেখা হয়েছে, ‘আমরা মেদিনীপুর জজ আদালতের সর্বসস্তরের আইনজীবীরা একটি অতি সংবেদনশীল এবং নিজের জীবন উৎসর্গকারী বিপ্লবীদের প্রতি অপমানজনক মন্তব্যের ব্যাপারে আপনার দৃষ্টি আকর্ষণ করছি এবং দোষী অধ্যাপকের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করছি।’

উল্লেখ্য, বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক স্তরে তৃতীয় বর্ষের ষষ্ঠ সেমেস্টার ইতিহাস পরীক্ষার প্রশ্নপত্র প্রকাশ্যে আসার পর বিতর্ক তৈরি হয়। প্রশ্নপত্রে লেখা হয়, ‘মেদিনীপুরের তিনজন জেলা ম্যাজিস্ট্রেট এর নাম কর, যারা সন্ত্রাসবাদীদের দ্বারা নিহত হন?’ ইতিহাস অনার্সের ‘মর্ডান ন্যাশনালিজম ইন ইন্ডিয়া’ পেপার থেকে এই প্রশ্নটি করা হয়। আদতে প্রশ্নপত্রে যাঁদেরকে সন্ত্রাসবাদী হিসেবে আখ্যা দেওয়া হয়েছে, তাঁরা ছিলেন বিপ্লবী। আর যে জেলাশাসকরা নিহত হয়েছিলেন তারা হলেন, অত্যাচারী ডিস্ট্রিক্ট ম্যাজিস্ট্রেট জেমস প্যাডি, ডগলাস ও বার্জ।বিপ্লবী বিমল দাশগুপ্ত, বিপ্লবী জ্যোতিজীবন ঘোষ, বিপ্লবী প্রদ্যোৎ ভট্টাচার্য, অনাথবন্ধু পাঁজা, মৃগেন দত্তরা তিন অত্যাচারী জেলাশাসককে খুন করেছিলেন।

ইতিমধ্যে বৃহস্পতিবার সাংবাদিক বৈঠক করে এই ঘটনার জন্য ক্ষমা চেয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য দীপককুমার কর। তিনি বলেন, ‘অনিচ্ছাকৃত, অসাবধানতাবশত এই ভুল হয়েছে।’ প্রশ্নপত্র প্রকাশ্যে আসার পর সরিয়ে দেওয়া হয়েছে, ইউজি বোর্ড অফ স্টাডিজের চেয়ারম্যান এবং মডারেশন বোর্ডের দায়িত্বপ্রাপ্ত সদস্যকে।

Mamata Banerjee: দিল্লিতে বাঙালি বসতিতে জল ও বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করল বিজেপি সরকার, উদ্বেগ মমতার

এই দিনকাল: ওড়িশা-সহ দেশের বিভিন্ন বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলিতে বাঙালিদের ধরপাকড় করা হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছিল আগেই। এই আবহে রাজধানী দিল্লিতে বাঙালি বসতিতে জল ও বিদ্যুতের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়ার অভিযোগ উঠল। এ বিষয়ে সরব হয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। গোটা ঘটনায় তিনি উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।

বৃহস্পতিবার নিজের ফেসবুক পেজে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় লিখেছেন, ‘নয়াদিল্লির বসন্তকুঞ্জের জয় হিন্দ কলোনি থেকে উঠে আসা একের পর এক ভয়ঙ্কর হেনস্তার ঘটনার খবর শুনে আমি গভীরভাবে মর্মাহত ও বিচলিত। এই বসতি মূলত সেই বাংলাভাষী মানুষেরা তৈরি করেছেন, যাঁরা দিল্লিকে গঠন করার অসংগঠিত শ্রমশক্তির গুরুত্বপূর্ণ এক অংশ। শোনা যাচ্ছে, বিজেপি পরিচালিত সরকারের নির্দেশে তাঁদের জল সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। দিন কয়েক আগে হঠাৎ বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়েছে এবং ইলেকট্রিসিটি মিটার তুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। বাসিন্দারা অভিযোগ করেছেন, তাঁরা নিজেদের টাকায় যে প্রাইভেট জলের ট্যাঙ্কারের ব্যবস্থা করেছিলেন, তা দিল্লি পুলিশ এবং আরএএফ-এর সহায়তায় আটকে দেওয়া হয়েছে।’

পশ্চিমবঙ্গেও দেশের বিভিন্ন রাজ্য থেকে পরিযায়ী শ্রমিকরা কাজের জন্য আসেন। সে বিষয়টি উল্লেখ করে মুখ্যমন্ত্রী লেখেন, ‘পশ্চিমবঙ্গে ১.৫ কোটিরও বেশি পরিযায়ী শ্রমিক রয়েছেন, যারা সম্মানের সঙ্গে বসবাস করেন। কিন্তু বিজেপি-শাসিত রাজ্যগুলিতে সেই কথা জোরের সঙ্গে বলা যায় না, যেখানে বাংলাভাষীদের নিজের দেশেই অনুপ্রবেশকারী হিসেবে দেখা হচ্ছে। কেউ বাংলায় কথা বললে, তিনি বাংলাদেশি হয়ে যান না। ভাষা নির্বিশেষে তাঁরা ভারতেরই নাগরিক, যেকোনো ভারতীয় নাগরিকের মতোই সমান অধিকারসম্পন্ন।’ তাঁর আরও সংযোজন, ‘পশ্চিমবঙ্গে বাঙালিদের অধিকার কেড়ে নেওয়ার যেসব চেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে, এবার সেই বাংলা-বিরোধী অপচেষ্টাকে দেশের অন্যান্য প্রান্তে শুরু করার কৌশল নিয়েছে বিজেপি। গুজরাট, মহারাষ্ট্র, ওড়িশা ও মধ্যপ্রদেশ থেকেও বাংলাভাষীদের উপর নিপীড়ন করার খবর পাওয়া যাচ্ছে। এখন সেই বিদ্বেষের ছায়া এসে পড়েছে দেশের রাজধানীতেও।’

তবে এই পরিস্থিতি বন্ধ না হলে, তৃণমূল যে বসে থাকবে না, তা স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী। তিনি লিখেছেন, ‘এই দেশেই বাংলার মানুষ যদি অনাহূত অতিথির মতো আচরণের শিকার হন, তাহলে আমরা চুপ করে থাকব না। বাংলা সমস্ত নির্যাতিত কণ্ঠের পাশে দাঁড়াবে। এই অন্যায়ের বিরুদ্ধে আমরা সর্বত্র আওয়াজ তুলব।’

শিশির আজমের দু’টি কবিতা

স্টিল লাইফ উইথ ইভনিং টেবল

🌿

পা দুটো স্বাধীন না আমি স্বাধীন, এ প্রশ্ন অবান্তর। গত সন্ধ্যায়

আমার টেবিলে দুটো প্রজাপতি এসেছিল,

মুখ দেখে মনে হলো সাইবেরিয়ান– না কি মিশরীয়,

দুই রাজকুমারী?

কিন্তু আমার বইগুলোর দিকে ওরা অমন বিশ্রীভাবে তাকাচ্ছিল কেন?

বইয়ের কি পা আছে?

দেখছিলাম প্রজাপতির ডানাগুলোকে আর ডানার আদিগন্ত সন্দেহজনক

বাঁকগুলোকে।

যা হোক আমার উচিৎ ছিল উৎকন্ঠিত না হয়ে

ওদের অভ্রধর্মীয় পাগুলোকে যথার্থভাবে পর্যবেক্ষণ করা

গোড়ালির অনতিদূর উপজাতীয় বনে কারা নিঃশঙ্ক ঘুরে বেড়ায়

তা দেখা।

যখন ওরা ঘুমোয়, ওদের পাগুলোকে ওরা রাখে কোথায়

এ তো আমাদের জানা দরকার।

মালকোশ

🌿

নিখিল ব্যানার্জী শুনতে শুনতে মনে হলো

আমাকে তুমি ডাকছো!

অথচ তুমি অনেক দূরে আর তেরো বছর তোমার সঙ্গে

আমার দেখা নেই।

তেরো বছর কোথাও আমি চিঠি লিখিনি।

এখন রাত দেড়টা।

নিখিল ব্যানার্জীর সঙ্গে তোমার কি দেখা হয়?

Rs 50 coin: বাজারে কি ৫০ টাকার কয়েন আসছে? কী জানাল মোদী সরকার?

এই দিনকাল: ১০ টাকা এবং ২০ টাকার কয়েন ইতিমধ্যে বাজারে ছেড়েছে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া। ১০, ২০ টাকার পরে এবার কি তবে ৫০ টাকার কয়েন (Rs 50 coin) মানুষের কাছে পৌঁছে দেবে দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্ক? এমন প্রশ্ন অনেকের মনে রয়েছে। তবে আপাতত সেই সম্ভাবনা নেই বলে জানাল কেন্দ্রীয় অর্থ মন্ত্রক। 

মঙ্গলবার কেন্দ্রীয় অর্থ মন্ত্রক দিল্লি হাইকোর্টকে জানিয়েছে যে বর্তমানে ৫০ টাকার কয়েন চালু করার কোনও পরিকল্পনা তাদের নেই। কারণ ১০ এবং ২০ টাকার মতো ভারী কয়েনের তুলনায় সাধারণ মানুষ নোটকে বেশি পছন্দ করেন। আর সে জন্যই ৫০ টাকার কয়েন চালুর কোনও ভাবনা নেই। কেন্দ্রীয় অর্থ মন্ত্রক মঙ্গলবার হলফনামা দিয়েছে আদালতে। সেখানে ২০২২ সালের রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার সমীক্ষার ফলাফল উদ্ধৃত করে মন্ত্রক বলেছে, মানুষ কয়েন এড়িয়ে চলেন কারণ কয়েনের ওজন, আকার এবং স্বতন্ত্রতার অভাবের জন্য। আর সে জন্য নোটগুলি দৈনন্দিন ব্যবহারে আরও বেশি গ্রহণযোগ্য হয়ে উঠেছে। মন্ত্রকের তরফে জানানো হয়েছে, কয়েন চালু করার আগে একাধিক বিষয় দেখা হয়। জনসাধারণের কাছে গ্রহণযোগ্যতা, ব্যবহারের ধরণ এবং অর্থনৈতিক বিবেচনার উপর নির্ভর করে কয়েন ছাড়া হয়। কিন্তু বর্তমানে ৫০ টাকার কয়েন চালু করার কোনও পরিকল্পনা নেই।

দৃষ্টি শক্তিতে বিশেষ ভাবে সক্ষম নাগরিকদের জন্য ৫০ টাকার কয়েন চালু করার জন্য আর্জি জানিয়েছিলেন আইনজীবী রোহিত দন্ড্রিয়াল। সেই আবেদনের প্রেক্ষিতে কেন্দ্রীয় অর্থ মন্ত্রক আদালতে এই বিষয়ে স্পষ্ট জানান।

ওই আইনজীবী জানান, ৫০ টাকার নোটের নকশার কারণে দৃষ্টিহীন ব্যক্তিরা দুর্দশার মুখোমুখি হন, তাদের জন্য মূল্যের পার্থক্য করা কঠিন হয়ে পড়েছে।

Nimisha Priya: ১৬ জুলাই ভারতীয় নার্স নিমিশা প্রিয়ার মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করবে ইয়েমেন

এই দিনকাল: ইয়েমেনি এক নাগরিককে হত্যার দায়ে আগেই ভারতীয় নার্স নিমিশা প্রিয়াকে (Nimisha Priya) দোষী সাব্যস্ত করে তাঁকে মৃত্যুদণ্ডের সাজা শুনিয়েছে ইয়েমেনের আদালত। আগামী ১৬ জুলাই ওই নার্সের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হবে বলে জানানো হয়েছে। কেরলের বাসিন্দা নিমিশা প্রিয়ার মৃত্যুদণ্ড গত বছর অনুমোদন করেছেন ইয়েমেনের রাষ্ট্রপতি। সংবাদ মাধ্যম সূত্রে খবর, ভারতের বিদেশ মন্ত্রকের তরফে বিষয়টি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। স্থানীয় প্রশাসন এবং নিমিশার পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছে বিদেশ মন্ত্রক। পাশাপাশি নিমিশার পরিবারকে সম্ভাব্য সকল সহায়তা প্রদান করছে মন্ত্রক। 

নিমিশা প্রিয়াকে কেন মৃত্যুদণ্ড?

পেশায় নার্স নিমিশা প্রিয়া ২০০৮ সালে ইয়েমেনে যান। সে দেশে বেশ কয়েকটি হাসপাতালে কাজ করেন তিনি। এক সময় নিজে ক্লিনিক খোলেন এবং ২০১৪ সালে তালাল আবদো মাহদির সংস্পর্শে আসেন। ইয়েমেনের নিয়ম অনুসারে সে দেশে ব্যবসা করতে গেলে স্থানীয়দের সঙ্গে অংশীদারিত্ব করে তা শুরু করা বাধ্যতামূলক। মূলত সেই কারণে মাহদির সঙ্গে ব্যবসা শুরু করেন তিনি। কিন্তু কেরলের ওই নার্সের সঙ্গে মাহদির ঝগড়া হয়। তার বিরুদ্ধে অভিযোগও দায়ের করেন নিমিশা। এরপর ২০১৬ সালে মাহদিকে গ্রেফতার করা হয়। পরে তার কারামুক্তি ঘটলেও মাহদি নিমিশাকে হুমকি দিতে থাকে বলে অভিযোগ।

নিমিশার পরিবারের দাবি, মাহদি নিমিশার পাসপোর্ট কেড়ে নিয়েছিল। সেই পাসপোর্ট উদ্ধারের জন্য মাহদির উপর ঘুমের ওষুধ প্রয়োগ করেছিলেন ওই নার্স। তবে, তার ওভারডোজের কারণে মাহদির মৃত্যু হয়। এক সময় ইয়েমেন ছেড়ে পালানোর চেষ্টা করেন নিমিশা। তখনই তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। ২০১৮ সালে তাঁকে হত্যার দায়ে দোষী সাব্যস্ত করা হয়। ইয়েমেনি নাগরিককে হত্যার দায়ে সে দেশের ট্রায়াল কোর্ট নিমিশাকে দোষী সাব্যস্ত করে, যা ২০২৩ সালের নভেম্বরে দেশটির সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল বহাল রাখে।

ইয়েমেনি আইনে সেদেশের স্বাধীনতা, ঐক্য বা আঞ্চলিক অখণ্ডতা লঙ্ঘন করা, সশস্ত্র বাহিনীকে দুর্বল করার জন্য কোনও কাজ করা, খুন, মাদক পাচার, ব্যভিচার, প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে সম্মতিক্রমে সমকামী যৌন কার্যকলাপ, ইসলাম থেকে মুখ ফিরিয়ে নেওয়া বা নিন্দা করা এবং পতিতাবৃত্তিতে সহায়তা করা-সহ বিভিন্ন অপরাধের জন্য মৃত্যুদণ্ডের বিধান রয়েছে।

নিমিশা প্রিয়াকে বাঁচাতে ‘ব্লাড মানি’

ভুক্তভোগীর পরিবারকে ‘ব্লাড মানি’ দেওয়ার মাধ্যমে নিমিশা প্রিয়াকে বাঁচানোর পথ খোলা ছিল। যদিও সেই অর্থের পরিমাণ সর্বদা নিহতের পরিবার ঠিক করে। মেয়ের জন্য মামলা লড়তে নিমিশা প্রিয়ার মা নিজের বাড়ি পর্যন্ত বিক্রি করে দেন। কোচিতে তিনি গৃহকর্মী হিসেবে কাজ করেন। রিপোর্ট অনুসারে, ভারতীয় দূতাবাস কর্তৃক নিযুক্ত আইনজীবী আবদুল্লাহ আমির আলোচনা ফি হিসেবে ২০ হাজার মার্কিন ডলার দাবি করেন, ভারতীয় মুদ্রায় যা প্রায় ১৬.৬ লক্ষ টাকা। মাহদির পরিবারের সঙ্গে ‘ব্লাড মানি’ নিয়ে আলোচনা হঠাৎ বন্ধ হয়ে যায় ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বরে।

গত বছরের জুলাই মাসে ভারতের বিদেশ মন্ত্রক আমিরকে ১৯৮৭১ মার্কিন ডলার দিয়েছিল। কিন্তু তিনি আলোচনা শুরু করার আগে দুটি কিস্তিতে মোট ৪০০০০ মার্কিন ডলার দাবি করেন। সেভ নিমিশা প্রিয়া ইন্টারন্যাশনাল অ্যাকশন কাউন্সিল ক্রাউডফান্ডিংয়ের মাধ্যমে আমিরের প্রথম কিস্তির অর্থ সংগ্রহ করতে সফল হয়। তবে, পরে তারা তহবিলের স্বচ্ছতা সংক্রান্ত কারণে চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়।

ভারত সরকার জানুয়ারিতে বলেছিল গোটা বিষয়টি নিবিড় ভাবে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। শুধু তাই নয়, নিমিশার পরিবারকে সম্ভাব্য সকল সাহায্য প্রদান করার কথাও জানিয়েছিল কেন্দ্র। নিমিশার মা মেয়ের জীবন বাঁচাতে আকুল আর্জি জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় সরকার এবং কেরল সরকারের কাছে।