Muslim: উত্তর প্রদেশে মুসলিম রোগীর প্রতি ‘বৈষম্য’ প্রকাশ্যে আনা সেই সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে এফআইআর যোগীর পুলিশের

এই দিনকাল: উত্তর প্রদেশের জৌনপুরে মুসলিম (Muslim) রোগীকে চিকিৎসা পরিষেবা দিতে অস্বীকার করায় চিকিৎসকের সংকীর্ণ ও ঘৃণ্য মানসিকতা সংবাদ শিরোনামে উঠে এসেছিল। যা নিয়ে জোর চর্চা শুরু হয়, কী ভাবে এক জন চিকিৎসক ধর্মীয় কারণে রোগীর পরিষেবা দিতে অস্বীকার করেন, তা নিয়েও প্রশ্ন উঠতে শুরু করে। এ বার সেই খবর প্রকাশ্যে আনায় দুই সাংবাদিকের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করল যোগী আদিত্যনাথের পুলিশ।

সংবাদ মাধ্যম সূত্রে খবর, ভিডিওটি প্রচার করার কারণে দুই স্থানীয় সাংবাদিক মায়াঙ্ক শ্রীবাস্তব এবং মহম্মদ উসমানের বিরুদ্ধে উত্তর প্রদেশের পুলিশ এফআইআর দায়ের করেছে। চিফ মেডিকেল সুপারিন্টেন্ডেন্ট মহেন্দ্র গুপ্ত কোতোয়ালি থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন। তাঁর অভিযোগ, সাংবাদিকরা ‘জোর করে’ লেবার রুমে প্রবেশ করে ভিডিও করেছেন এবং হাসপাতালের সম্পত্তির ক্ষতি করেছেন।

উল্লেখ্য, শামা পারভিন (Shama Parveen) নামে এক মুসলিম মহিলা অভিযোগ করেন, জৌনপুরের জেলা হাসপাতালের এক জন ডাক্তার ধর্মীয় কারণে প্রসবকালীন সময়ে তাঁর চিকিৎসা করতে অস্বীকার করেছেন। ১ অক্টোবর, সমাজ মাধ্যমে একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে যেখানে শামা দাবি করেন, ডাক্তার তাঁকে বলেছেন, ‘আমি এক জন মুসলিম মহিলার চিকিৎসা করব না।’ অভিযোগ, শুধু তাই নয়, উপস্থিত নার্সকে তাঁকে অপারেশন থিয়েটারে না নিয়ে যাওয়ারও নির্দেশ দেন ওই চিকিৎসক। শামার পরিবারকে অন্য কোথাও চিকিৎসার জন্য তাঁকে নিয়ে যেতে বলেন অভিযুক্ত ডাক্তার।

বিষয়টি নিয়ে চিফ মেডিকেল সুপারিনটেনডেন্ট মহেন্দ্র গুপ্ত বলেন, তিনি অভিযোগ শুনে বিস্মিত হয়েছেন এবং ডাক্তারের কাছ থেকে ব্যাখ্যা চেয়েছেন। তাঁর কথায়, ‘ডাক্তার ধর্মের ভিত্তিতে এমন কোনও মন্তব্য করার কথা অস্বীকার করেছেন। বিষয়টি তদন্ত করা হয়েছে এবং উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।’

অন্য দিকে, এই ঘটনা তীব্র রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়া তৈরি করেছে। উত্তর প্রদেশে সমাজবাদী পার্টির বিধায়ক রাগিনী সোনকার এই ঘটনাকে লজ্জাজনক বলে অভিহিত করেছেন। তিনি বলেন, ‘এটি রাজ্যজুড়ে ছড়িয়ে পড়া সাম্প্রদায়িক উত্তেজনার ফল। প্রসববেদনায় ভোগা কোনও মহিলা চিকিৎসা না পাওয়ার কথা মিথ্যা বলবেন না।’ ডাক্তারের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়েরের পরিবর্তে সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে মামলা করায় তিনি যোগী আদিত্যনাথ সরকারের বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন। ওই বিধায়ক বলেন, তিনি জেলা শাসকের সঙ্গে দেখা করবেন। প্রয়োজনে বিধানসভায় বিষয়টি তুলবেন।

কংগ্রেস নেতা বিকাশ উপাধ্যায় ভিক্কি এই ঘটনার নিন্দা জানিয়ে বলেন, ‘এটা অত্যন্ত লজ্জাজনক যে একজন চিকিৎসক, যিনি সমাজের সকল শ্রেণীর সেবা করার শপথ নিয়েছেন, তিনি ধর্মীয় কারণে চিকিৎসা প্রত্যাখ্যান করেছেন। এই পরিস্থিতিতে ভুক্তভোগীর কোনও জাতি বা ধর্ম নেই। কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।’ 

তবে বিজেপি মুখপাত্র অবনীশ ত্যাগী অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তাঁর দাবি, এগুলো ভিত্তিহীন অভিযোগ এবং সমাজে বিভেদ ছড়ানোর জন্য। বিজেপি নেতার কথায়, ‘সরকারের ‘সবকা সাথ, সবকা বিকাশ’ নীতির আদলে সমাজের সকল শ্রেণীর মধ্যে জনকল্যাণমূলক প্রকল্প পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। যোগী আদিত্যনাথের নেতৃত্বাধীন সরকারে কোনও বৈষম্য নেই।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *