Tag Archives: West Bengal

SIR: এসআইআর-এ কোন নথি প্রয়োজন? দেখে নিন সম্পূর্ণ তালিকা

এই দিনকাল: বঙ্গে শুরু হয়ে গিয়েছে স্পেশাল ইন্টেন্সিভ রিভিশন বা এসআইআর (SIR)। ভোটার তালিকা স্বচ্ছ ও ত্রুটিমুক্ত করতে নির্বাচন কমিশন দেশজুড়ে ধাপে ধাপে এই বিশেষ নিবিড় সমীক্ষা শুরু করেছে বলে দাবি। যদিও বিজেপি বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি হুঁশিয়ারি দিয়ে রেখেছে, প্রকৃত ভোটারের নাম বাদ গেলে বৃহত্তর আন্দোলনে নামার। কোন কোন নথি এসআইআর এর জন্য প্রয়োজন সে বিষয়ে কমিশনের তরফে স্পষ্ট ভাবে জানানো হয়েছে।

নির্বাচন কমিশন সূত্রের খবর, ২০০২ সালে ভোটার তালিকায় যাঁদের নাম রয়েছে, তাঁদের আলাদা করে নথি জমা দিতে হবে না। নথি দিতে হবে না যাঁদের বাবা, মায়ের নাম ২০০২ সালের ভোটার তালিকায় রয়েছে তাঁদেরকেও। পাশাপাশি যাঁদের নাম ২০০২ সালের তালিকায় নেই বা যাঁদের বাবা, মায়ের নাম ওই তালিকায় নেই তাঁদের জন্য ১১টি নথির একটি তালিকা দেওয়া হয়েছে কমিশনের তরফে। এই তালিকায় থাকা যে কোনও একটি নথি দিলে এসআইআর প্রক্রিয়ায় নাম তোলা যাবে।

এক নজরে ১১ নথি

১) কেন্দ্রীয় সরকার অথবা রাজ্য সরকারের কর্মী হিসাবে কর্মরত ছিলেন বা পেনশন পান এমন নথি।

২) ১৯৮৭ সালের ১ জুলাইয়ের আগে ব্যাঙ্ক, পোস্ট অফিস, এলআইসি, স্থানীয় প্রশাসনের তরফে দেওয়া আপনার নামে থাকা যে কোনও নথি। 

৩) জন্ম শংসাপত্র। 

৪) পাসপোর্ট। 

৫) মাধ্যমিক বা তার উর্ধ্বে কোনও শ্রেণীর শিক্ষাগত শংসাপত্র।

৬) রাজ্য সরকারের দেওয়া স্থায়ী বাসিন্দা শংসাপত্র। 

৭) বন অধিকার শংসাপত্র। 

৮) এসসি, এসটি, ওবিসি বা অন্য কোনও জাতিগত শংসাপত্র।

৯) জাতীয় নাগরিকপঞ্জী বা এনআরসি।

১০) রাজ্য সরকার বা স্থানীয় প্রশাসনের দেওয়া ফ্যামিলি রেজিস্ট্রার।

১১) জমি অথবা বাড়ির দলিল।

কমিশন জানিয়েছে, আধার কার্ড যেহেতু নাগরিকত্বের প্রমাণ নয়, তাই আধারের সঙ্গে উপরের যে কোনও একটা নথি দিতে হবে। 

উল্লেখ্য, পশ্চিমবঙ্গ-সহ দেশের ১২ রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে ভোটার তালিকায় স্পেশাল ইন্টেন্সিভ রিভিশন বা এসআইআর (SIR) প্রক্রিয়া চালুর কথা সোমবার ঘোষণা করেছেন মুখ্য নির্বাচন কমিশনার জ্ঞানেশ কুমার। পশ্চিমবঙ্গ, তামিলনাড়ু, উত্তরপ্রদেশ, রাজস্থান, ছত্তীসগঢ়, গোয়া, গুজরাট, কেরল, লাক্ষাদীপ, মধ্যপ্রদেশ, পুদুচেরি, আন্দামান ও নিকোবরে ভোটার তালিকায় বিশেষ নিবিড় সমীক্ষার কাজ ২৮ অক্টোবর থেকে শুরু হয়ে গিয়েছে। ওই দিন থেকে এই রাজ্যগুলিতে এনুমেরেশন ফর্ম ছাপা এবং বিএলওদের প্রশিক্ষণের কাজ চালু হয়েছে। যা চলবে আগামী ৩ নভেম্বর পর্যন্ত। 

কমিশনের তরফে জানানো হয়েছে, বাড়ি বাড়ি গিয়ে এনুমেরেশন ফর্ম দেওয়া হবে ৪ নভেম্বর থেকে। চলবে ৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত। খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশিত হবে ৯ ডিসেম্বর। সেই তালিকা নিয়ে যদি কারোর অভিযোগ থাকে তাহলে তা জানাতে হবে ৯ ডিসেম্বর থেকে আগামী বছর ৮ জানুয়ারির মধ্যে। অভিযোগ খতিয়ে দেখার কাজ চলবে ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত। সবশেষে চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ হবে ৭ ফেব্রুয়ারি।

SIR: এসআইআর নিয়ে ডাকা সর্বদল বৈঠকে প্রশ্নের মুখে কমিশন

এই দিনকাল: ভোটার তালিকায় স্পেশাল ইন্টেন্সিভ রিভিশন (SIR) বা বিশেষ নিবিড় সমীক্ষা চালু হয়েছে পশ্চিমবঙ্গ-সহ ১২ রাজ্যে। সোমবার দিল্লিতে মুখ্য নির্বাচন কমিশনার জ্ঞানেশ কুমার এসআইআর এর নির্ঘন্ট ঘোষণার পর মঙ্গলবার বিকেল ৪টেয় সর্বদলীয় বৈঠক ডেকেছিলেন রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক মনোজকুমার আগরওয়াল। কলকাতায় কমিশনের রাজ্য দফতরে সেই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন তৃণমূল, বিজেপি, সিপিএম ও কংগ্রেসের প্রতিনিধিরা। সেখানেই বিজেপি বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলির প্রশ্নের মুখে পড়ে কমিশন।

রাজ্যের মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস বৈঠকে অংশ নিয়েছিলেন। কমিশনকে বিঁধে তিনি বলেন, এসআইআর নিয়ে প্রচুর মানুষ আতঙ্কিত। অনেকে আত্মহত্যা করছেন। এই মৃত্যুর দায় কমিশনকেই নিতে হবে বলে সরব হয়েছেন তিনি। তাঁর অভিযোগ, এসআইআর এনআরসি-র পূর্বপরিকল্পিত। কলকাতার মেয়র তথা রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমও বৈঠকে ছিলেন। তিনি হুঁশিয়ারি দেন, বাংলার এক জন বৈধ ভোটারের নাম তালিকা থেকে বাদ গেলেই প্রতিবাদ করবে তৃণমূল। 

সর্বদল বৈঠকে সিপিএমের সুজন চক্রবর্তী প্রশ্ন তোলেন, এসআইআর এর ক্ষেত্রে কমিশন থেকে যে নথিগুলির কথা বলা হচ্ছে, সেগুলি নাগরিকত্বের প্রমাণ, এটা কী ভাবে বলা হচ্ছে? নাগরিকত্ব ঠিক করার অধিকার কমিশনকে কে দিয়েছে? এদিনের বৈঠকে এসআইআর প্রক্রিয়া নিয়ে তৃণমূল ও বামেদের তরফে প্রশ্ন তোলা হলেও বিজেপির তরফে কমিশনের পদক্ষেপকে স্বাগত জানানো হয়েছে।

অন্য দিকে এদিন সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক মনোজকুমার আগরওয়াল বলেন, ‘এসআইআর আজ থেকে চালু হয়েছে। ৩ নভেম্বর পর্যন্ত বিএলও প্রশিক্ষণ হবে। প্রত্যেক ভোটারের একটি কিউআর কোড হবে। ওটা নিয়ে ফর্ম প্রিন্টিং হবে। এর পরে বাড়ি বাড়ি গিয়ে ৪ নভেম্বর থেকে ৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত গণনা হবে।’ তিনি আরও বলেন, সোমবার মধ্যরাতে ভোটার তালিকা ফ্রিজ হয়েছে। ওই সময়সীমা পর্যন্ত রাজ্যে ভোটার রয়েছেন ৭ কোটি ৬৬ লক্ষ ৩৭ হাজার ৫২৯ জন।

Mamata Banerjee: দিল্লিতে বাঙালি বসতিতে জল ও বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করল বিজেপি সরকার, উদ্বেগ মমতার

এই দিনকাল: ওড়িশা-সহ দেশের বিভিন্ন বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলিতে বাঙালিদের ধরপাকড় করা হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছিল আগেই। এই আবহে রাজধানী দিল্লিতে বাঙালি বসতিতে জল ও বিদ্যুতের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়ার অভিযোগ উঠল। এ বিষয়ে সরব হয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। গোটা ঘটনায় তিনি উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।

বৃহস্পতিবার নিজের ফেসবুক পেজে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় লিখেছেন, ‘নয়াদিল্লির বসন্তকুঞ্জের জয় হিন্দ কলোনি থেকে উঠে আসা একের পর এক ভয়ঙ্কর হেনস্তার ঘটনার খবর শুনে আমি গভীরভাবে মর্মাহত ও বিচলিত। এই বসতি মূলত সেই বাংলাভাষী মানুষেরা তৈরি করেছেন, যাঁরা দিল্লিকে গঠন করার অসংগঠিত শ্রমশক্তির গুরুত্বপূর্ণ এক অংশ। শোনা যাচ্ছে, বিজেপি পরিচালিত সরকারের নির্দেশে তাঁদের জল সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। দিন কয়েক আগে হঠাৎ বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়েছে এবং ইলেকট্রিসিটি মিটার তুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। বাসিন্দারা অভিযোগ করেছেন, তাঁরা নিজেদের টাকায় যে প্রাইভেট জলের ট্যাঙ্কারের ব্যবস্থা করেছিলেন, তা দিল্লি পুলিশ এবং আরএএফ-এর সহায়তায় আটকে দেওয়া হয়েছে।’

পশ্চিমবঙ্গেও দেশের বিভিন্ন রাজ্য থেকে পরিযায়ী শ্রমিকরা কাজের জন্য আসেন। সে বিষয়টি উল্লেখ করে মুখ্যমন্ত্রী লেখেন, ‘পশ্চিমবঙ্গে ১.৫ কোটিরও বেশি পরিযায়ী শ্রমিক রয়েছেন, যারা সম্মানের সঙ্গে বসবাস করেন। কিন্তু বিজেপি-শাসিত রাজ্যগুলিতে সেই কথা জোরের সঙ্গে বলা যায় না, যেখানে বাংলাভাষীদের নিজের দেশেই অনুপ্রবেশকারী হিসেবে দেখা হচ্ছে। কেউ বাংলায় কথা বললে, তিনি বাংলাদেশি হয়ে যান না। ভাষা নির্বিশেষে তাঁরা ভারতেরই নাগরিক, যেকোনো ভারতীয় নাগরিকের মতোই সমান অধিকারসম্পন্ন।’ তাঁর আরও সংযোজন, ‘পশ্চিমবঙ্গে বাঙালিদের অধিকার কেড়ে নেওয়ার যেসব চেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে, এবার সেই বাংলা-বিরোধী অপচেষ্টাকে দেশের অন্যান্য প্রান্তে শুরু করার কৌশল নিয়েছে বিজেপি। গুজরাট, মহারাষ্ট্র, ওড়িশা ও মধ্যপ্রদেশ থেকেও বাংলাভাষীদের উপর নিপীড়ন করার খবর পাওয়া যাচ্ছে। এখন সেই বিদ্বেষের ছায়া এসে পড়েছে দেশের রাজধানীতেও।’

তবে এই পরিস্থিতি বন্ধ না হলে, তৃণমূল যে বসে থাকবে না, তা স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী। তিনি লিখেছেন, ‘এই দেশেই বাংলার মানুষ যদি অনাহূত অতিথির মতো আচরণের শিকার হন, তাহলে আমরা চুপ করে থাকব না। বাংলা সমস্ত নির্যাতিত কণ্ঠের পাশে দাঁড়াবে। এই অন্যায়ের বিরুদ্ধে আমরা সর্বত্র আওয়াজ তুলব।’