Tag Archives: West Bengal BJP

West Bengal BJP : তৃণমূলকে সরাতে বাম কংগ্রেসের হাত ধরতে চায় বঙ্গ বিজেপি! কটাক্ষ শতরূপ, অধীরের

এই দিনকাল: রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেসকে (TMC) ক্ষমতা থেকে সরাতে বাম ও কংগ্রেসের হাত ধরতে চায় পশ্চিমবঙ্গ বিজেপি (West Bengal BJP)! রবিবার শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের জন্মদিবস উপলক্ষে কলকাতার রেড রোডে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে এমন বার্তা দেন রাজ্য বিজেপির নয়া সভাপতি শমীক ভট্টাচার্য।

রবিবার শমীক ভট্টাচার্য সিপিএম ও কংগ্রেস নেতৃত্বের উদ্দেশে বলেন, ‘নিজের মতাদর্শ সরিয়ে রেখে শ্যামাপ্রসাদের প্রস্তাবে ভোট দিয়েছিলেন জ্যোতি বসু। এটা পশ্চিমবঙ্গ রক্ষার লড়াই। ইন্দিরা গান্ধীর হাতে সব অস্ত্র তুলে দিয়েছিলেন অটল বিহারি বাজপেয়ী। আজকের লড়াইটাও রাজনীতির উর্ধ্বে ওঠার লড়াই। জ্যোতি বসুকে সম্মান করলে তাঁর গড়া পশ্চিমবঙ্গকে রক্ষা করতে এগিয়ে আসুন।’ বিজেপি সভাপতির এমন মন্তব্যের স্বাভাবিক ভাবে বিরোধিতা করেছে কংগ্রেস ও সিপিএম। এ বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে কংগ্রেস নেতা অধীর চৌধুরী বলেন, বিজেপি হিন্দুরাষ্ট্র গঠন করতে চায়। কিন্তু বাংলায় না পেরে উঠে জোট বাঁধার কথা বলছে। বরং বিজেপির বিরুদ্ধে সবার ঐক্যবদ্ধ হওয়া উচিৎ বলে মন্তব্য করেন তিনি।

শমীক ভট্টাচার্যের কথার প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন সিপিএম নেতা শতরূপ ঘোষ। তিনি বলেন, জ্যোতি বসু বিজেপিকে অসভ্য ও বর্বরদের দল বলতেন। প্রয়াত বর্ষীয়াণ মুখ্যমন্ত্রীর দেখানো পথেই অসাম্প্রদায়িক বাংলা রক্ষা করতে হবে বলে মন্তব্য করেন তরুণ বাম নেতা। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী হিন্দু ভোট এক করার লক্ষ্যে হিন্দুদের জোট বাঁধার বার্তা আগে থেকেই দিয়ে আসছেন। শমীক ভট্টাচার্য সভাপতি হয়ে হিন্দু ও মুসলিম ভোট পদ্ম শিবিরের দিকে টানার চেষ্টা করছেন।

Samik Bhattacharya: ‘বিজেপির কাছে মুসলিমরা অচ্ছুৎ নয়’, দায়িত্ব নিয়েই বার্তা শমীকের

এই দিনকাল: পশ্চিমবঙ্গ বিজেপির (BJP) রাজ্য সভাপতি হয়ে ছক ভাঙা বার্তা শমীক ভট্টাচার্যের (Samik Bhattacharya)। বৃহস্পতিবার রাজ্য সভাপতি (West Bengal State President) হিসেবে শমীক ভট্টাচার্যের নাম ঘোষণা করা হয় আনুষ্ঠানিক ভাবে। নয়া দায়িত্ব পাওয়ার পর তাঁর প্রথম ভাষণে তাৎপর্যপূর্ণ বার্তা দিলেন বিজেপি নেতা। এদিন বক্তৃতায় হিন্দু-মুসলিম ঐক্যের বার্তা দেন তিনি। গেরুয়া শিবিরে যা কার্যত অভাবনীয় বলে মত রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের।

বঙ্গ বিজেপিতে সুবক্তা হিসাবে সুপরিচিত শমীক ভট্টাচার্য। রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘের সঙ্গে তিনি দীর্ঘ দিন ধরে যুক্ত। অথচ কেবলই হিন্দু ঐক্যের বার্তা না দিয়ে তিনি হিন্দু-মুসলমান সসম্প্রীতির বার্তা দিয়ে গেরুয়া শিবিরের রাজনীতিতে নতুন ভাষ্য তৈরি করতে চাইছেন বলে মত পর্যবেক্ষকদের। প্রসঙ্গত সাম্প্রতিক কালে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী একাধিক বার হিন্দুদের জোট বাঁধার বার্তা দিয়েছেন। সেই পথে না হেঁটে সংখ্যালঘুদের নিয়ে চলার বার্তা দিয়ে রাজ্য রাজনীতিতে তাৎপর্যপূর্ণ ইঙ্গিত নয়া রাজ্য সভাপতির। 

মুসলিমরা যে বিজেপির কাছে অচ্ছ্যুৎ নয়, এদিন সভাপতি নির্বাচিত হওয়ার পর তাঁর প্রথম ভাষণে বুঝিয়ে দিয়েছেন শমীক ভট্টাচার্য। তিনি বলেন, ‘দিনের পর দিন একটা সাম্প্রদায়িক বিভাজন তৈরি করে দেওয়া হয়েছে রাজ্যের মাটিতে। আজকে সংখ্যালঘুদের বুঝতে হবে। যে বিজেপির লড়াই সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে নয়। বিজেপির লড়াই কোনও মুসলমানের বিরুদ্ধে নয়। আমাদের লড়াই হল আপনাদের বাড়ির ছেলেরা যারা পাথর হাতে নিয়ে ঘুরছে আমরা ওই পাথরটাকে কেড়ে নিয়ে ওখানে বই ধরিয়ে দিতে চাই। যারা তলোয়ার নিয়ে নেমেছে আমরা ওই তলোয়ার কেড়ে নিয়ে তাদের হাতে কলম ধরিয়ে দিতে চাই। এটা পশ্চিমবঙ্গে বিজেপি করে দেখাবে। আমরা চাই দুর্গাপুজোর বিসর্জন আর মহরমের মিছিল একই সময় একই রাস্তা দিয়ে একই সময় হেঁটে যাবে। কোনও সংঘর্ষ নেই, কোনও দাঙ্গা নেই। কোনও রাজনৈতিক সম্প্রীতির বিভাজন নেই। পশ্চিমবঙ্গকে বাঁচাতে হবে, এর বহুত্ববাদকে বাঁচাতে হবে। এই মাটিকে রক্ষা করতে হবে।’

এদিন শমীক ভট্টাচার্য সংখ্যালঘু সমাজের উদ্দেশ্যে প্রশ্ন করেন, ‘বাংলার সংখ্যালঘু ভাই বোনেরা সৈয়দ মুস্তাফা সিরাজ, সৈয়দ মুজতবা আলি, এস ওয়াজেদ আলি, নজরুলের কথা শুনবে, না কোনও উগ্রপন্থীর ভাষা শুনবে। হুমায়ুন কবিরের বক্তব্যকে গ্রহণ করবে?’

তাঁর আরও সংযোজন, ‘দেখুন রাজ্যের দিকে তাকিয়ে। মরছে মুসলমান, মারছে মুসলমান, কারা এই অবস্থা তৈরি করল? আপনারা মনে করলে বিজেপিকে ভোট দেবেন না, কিন্তু আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে নিজেকে প্রশ্ন করুন, গত ৩ বছরে পশ্চিমবঙ্গে যত খুন হয়েছে তার মধ্যে মুসলমানের সংখ্যা কত। ৯০ শতাংশ মুসলমান খুন। মরছে মুসলমান, মারছে মুসলমান। আর তাদের পরিবার বলছে সিবিআই তদন্ত চাই।’