Tag Archives: Asaduddin Owaisi

AIMIM: ‘বিহার বিধানসভা নির্বাচনে ৬টি আসনে লড়ার সুযোগ দিলে ইন্ডিয়া জোটে যোগ দেব’: ওয়েইসি

এই দিনকাল: বিহারে ‘বিজেপিকে সাহায্য করার’ অভিযোগ ওঠে তাঁর দলের বিরুদ্ধে। এ বিষয়ে এ বার অসন্তোষ প্রকাশ করলেন আইমিম (AIMIM) -এর প্রধান আসাদউদ্দিন ওয়েইসি। বুধবার তিনি স্পষ্ট জানিয়েছেন, আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে পূর্ব ভারতের এই রাজ্যের ছয়টি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারলে মিম ইন্ডিয়া জোটে যোগ দেবে।

প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ মুসলিম জনসংখ্যার উত্তর বিহারের কিষাণগঞ্জে তিন দিনের ‘সীমাঞ্চল ন্যায় যাত্রা’ শুরু করেছেন হায়দরাবাদের সাংসদ। সেখানে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে ওয়েইসি বলেন, ‘আমার দলের বিহার ইউনিটের প্রধান বিহার বিধানসভার বিরোধী দলনেতা তেজস্বী যাদবকে একাধিক চিঠি লিখেছেন। শেষ চিঠিতে, ২৪৩ আসন বিশিষ্ট বিধানসভার নির্বাচনে আইমিমকে ছয়টি আসন দেওয়ার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘বল এখন ইন্ডিয়া জোটের কোর্টে। বিজেপিকে সাহায্য করার অভিযোগ আমাদের বিরুদ্ধে যাতে না আসে, সেকারণে আমরা এই পদক্ষেপ নিয়েছি। ইন্ডিয়া ব্লকের পক্ষ থেকে যথাযথ প্রতিক্রিয়া না পাওয়ায় স্পষ্ট হয়ে যাবে কে আসলে পদ্ম শিবিরকে সাহায্য করছে।’

উল্লেখ্য, বিহারে ২০২০ সালের বিধানসভা নির্বাচনে আইমিম ২০টি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিল। যার মধ্যে পাঁচটিতে জয়লাভ করেছিল। যদিও, বিহার ইউনিটের সভাপতি আখতারুল ইমান ছাড়া, আইমিম-এর টিকিটে নির্বাচিত সকল বিধায়ক নির্বাচনের দুই বছর পর আরজেডি-তে যোগ দিয়েছিলেন।

Muslim: ‘মুসলিম-মুক্ত ভারত স্বপ্ন’: অসম বিজেপির এআই ভিডিও প্রসঙ্গে তীব্র প্রতিক্রিয়া ওয়েইসির

এই দিনকাল: সমাজ মাধ্যমে অসম বিজেপির (BJP) তরফে মুসলিম (Muslim) বিদ্বেষে পূর্ণ এআই ভিডিও পোস্ট করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। যা নিয়ে শুরু হয়েছে বিতর্ক। অভিযোগ, পদ্ম শিবির মুসলিমদের অপমান করতে এবং সাম্প্রদায়িক ঘৃণা উস্কে দিতে এ কাজ করেছে। বিষয়টি নিয়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন আইমিম প্রধান তথা সাংসদ আসাদউদ্দিন ওয়েইসি।

ঠিক কী অভিযোগ? নিজেদের এক্স হ্যান্ডেলে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই দিয়ে তৈরি ভিডিও প্রকাশ করেছে অসম বিজেপি। ‘বিজেপি ছাড়া অসম’ শিরোনামের ভিডিওটিতে রাজ্যের বিভিন্ন অংশের মুসলমানদের অবৈধ অভিবাসী হিসেবে দেখানো হয়েছে। যারা কিনা সরকারি জমি দখল করছে বলে দাবি বিজেপির। ভিডিওটিতে একটি ক্লিপ রয়েছে যেখানে কংগ্রেস নেতা গৌরব গগৈ এবং রাহুল গান্ধীকে দেখানো হয়েছে কংগ্রেস দলের পাকিস্তান যোগ রয়েছে দাবি করে।

এই ভিডিও সমাজ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পর নিন্দায় সরব হয়েছেন রাজনীতিবিদ থেকে শুরু করে নেটাগরিকরা। তাঁদের প্রশ্ন অসমে মুসলিম বিদ্বেষ উস্কে দেওয়ার লক্ষ্যে কি এটা করা হয়েছে? কংগ্রেস নেতা মনসুর খান এটিকে ‘সামাজিক সম্প্রীতির উপর ইচ্ছাকৃত আক্রমণ এবং অংশীদারি মূল্যবোধের অপমান’ বলে অভিহিত করেছেন। নিজের এক্স হ্যান্ডেলে তিনি লিখেছেন, ‘সাম্প্রদায়িক ঘৃণা উস্কে দেওয়ার জন্য অসমকে মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ হিসেবে দেখিয়ে একটি ভুয়ো, এআই-ভিত্তিক ভিডিও ছড়িয়ে রাজনৈতিক প্রচারণার সর্বনিম্ন স্তরে পৌঁছেছে অসম বিজেপি। এটি সামাজিক সম্প্রীতির উপর ইচ্ছাকৃত আক্রমণ, আমাদের অংশীদারি মূল্যবোধের অপমান। অসমের মানুষ এই বিষাক্ত প্রচারণার সঠিক জবাব দেবে।’

আইমিম সভাপতি আসাদউদ্দিন ওয়েইসি ভিডিওটির নিন্দা করে এক্স হ্যান্ডেলে লিখেছেন, ‘বিজেপির স্বপ্ন মুসলিম মুক্ত ভারত।’ তাঁর কথায়, ‘বিজেপি না থাকলে অসম মুসলিম প্রধান হবে এমন একটি জঘন্য এআই ভিডিও পোস্ট করেছে অসম বিজেপি। তারা কেবল ভোটের জন্য ভয় দেখাচ্ছে না, এটিই প্রকৃত রূপে ঘৃণ্য হিন্দুত্ববাদী আদর্শ। ভারতে মুসলমানদের অস্তিত্বই তাদের কাছে একটি সমস্যা, তাদের স্বপ্ন মুসলিম-মুক্ত ভারত। এই ক্রমাগত ঘ্যানঘ্যানানি ছাড়া, ভারতের জন্য তাদের কোনও দৃষ্টিভঙ্গি নেই।’

Malegaon blasts: মালেগাঁও বিস্ফোরণ কাণ্ডে বেকসুর খালাস সাধ্বী-সহ সাত অভিযুক্ত, ‘কারা মারল ৬ নামাজিকে?’ প্রশ্ন ওয়েইসির

এই দিনকাল: মহারাষ্ট্রের মালেগাঁওয়ে ২০০৮ সালের বিস্ফোরণের (Malegaon blasts) ঘটনায় এনআইএ এর বিশেষ আদালত বেকসুর খালাস দিয়েছে সাধ্বী প্রজ্ঞা ওরফে প্রজ্ঞা সিং ঠাকুর-সহ সাত অভিযুক্তকে। বৃহস্পতিবার আদালতের এই রায়ের পর হতাশা প্রকাশ করেছেন অল ইন্ডিয়া মজলিস ই ইত্তেহাদুল মুসলিমিন তথা আইমিম দলের প্রধান আসাদউদ্দিন ওয়েইসি। তাঁর প্রশ্ন, ছয় নামাজিকে কারা মারল?

বৃহস্পতিবার আসাদউদ্দিন ওয়েইসি নিজের এক্স হ্যান্ডেলে পাঁচটি প্রশ্ন তুলেছেন। তিনি লিখেছেন, ‘মালেগাঁও বিস্ফোরণ মামলার রায় হতাশাজনক। বিস্ফোরণে ছয়জন নামাজি নিহত হন এবং প্রায় ১০০ জন আহত হন। তাদের ধর্মের জন্য লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছিল। ইচ্ছাকৃতভাবে দুর্বল তদন্ত/প্রসিকিউশনের কারণে অভিযুক্তরা খালাস পেয়েছেন।’ তাঁর আরও সংযোজন, ‘বিস্ফোরণের ১৭ বছর পর, আদালত প্রমাণের অভাবে সকল অভিযুক্তকে খালাস করে দিয়েছে। মুম্বই ট্রেন বিস্ফোরণের মামলায় আসামিদের খালাসের পরেই যেভাবে রায়ে স্থগিতাদেশ চেয়েছিল মোদি ও ফড়ণবিস সরকার, এই রায়ের বিরুদ্ধেও কি তেমন আপিল করা হবে? মহারাষ্ট্রের ‘ধর্মনিরপেক্ষ’ রাজনৈতিক দলগুলি কি জবাব চাইবে, ৬ জন মানুষকে কে হত্যা করল?’

‘তৃতীয়ত, মনে রাখবেন, ২০১৬ সালে মামলার তৎকালীন প্রসিকিউটর রোহিণী সালিয়ান রেকর্ডে বলেছিলেন যে এনআইএ তাকে অভিযুক্তদের প্রতি ‘নরম’ হতে বলেছিল। ২০১৭ সালে, এনআইএ সাধ্বী প্রজ্ঞাকে খালাস দেওয়ার চেষ্টা করেছিল। ২০১৯ সালেও একই ব্যক্তি বিজেপির সাংসদ হয়েছিলেন। চতুর্থত, মালেগাঁওয়ের ষড়যন্ত্র উন্মোচন করেছিলেন কারকারে এবং দুর্ভাগ্যবশত ২৬/১১ হামলায় পাকিস্তানি সন্ত্রাসীদের হাতে নিহত হন। বিজেপি সাংসদ বলেছিলেন যে তিনি তাঁকে অভিশাপ দিয়েছিলেন এবং তাঁর মৃত্যু তাঁর অভিশাপের ফল। পঞ্চমত, ত্রুটিপূর্ণ তদন্তের জন্য কি এনআইএ বা এটিএস আধিকারিকদের জবাবদিহি করা হবে? আমার মনে হয় আমরা এর উত্তর জানি। এটাই ‘সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে কঠোর’ মোদী সরকার। বিশ্ব মনে রাখবে যে তারা একজন সন্ত্রাসীকে সংসদ সদস্য করেছিল।’

উল্লেখ্য, ২০০৮ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর রমজান মাস চলাকালীন উত্তর মহারাষ্ট্রের মালেগাঁও শহরে একটি মসজিদের কাছে ভয়াবহ বিস্ফোরণ ঘটে। একটি মোটরসাইকেলে রাখা বোমা থেকে বিস্ফোরণ ঘটে সেদিন। এই বিস্ফোরণের ফলে ছয় জন নিহত হন এবং ১০০ জনেরও বেশি আহত হন। সেই ঘটনায় নাম জড়ায় সাধ্বী প্রজ্ঞা-সহ সাত জনের। তদন্তে উঠে আসে যে এই বিস্ফোরণের পিছনে ছিল একটি একটি হিন্দুত্ববাদী সংগঠন। পরে গ্রেফতার হন সাধ্বী প্রজ্ঞা এবং প্রাক্তন সেনা আধিকারিক লেফটেন্যান্ট কর্নেল প্রসাদশ্রীকান্ত পুরোহিত। যদিও পরে দু’জনেই জামিন পান। বৃহস্পতিবার এনআইএ বিশেষ আদালত জানায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে যে তথ্যপ্রমাণ দাখিল করা হয়েছে, তা সন্দেহের ঊর্ধ্বে নয়। 

প্রসঙ্গত, ২০১৯ সালে সন্ত্রাসে অভিযুক্ত প্রজ্ঞাকে মধ্যপ্রদেশের ভোপাল লোকসভা কেন্দ্রের টিকিট দিয়েছিল বিজেপি। জয়ী হয়ে সাংসদ হয়েছিলেন তিনি। যদিও গত লোকসভা নির্বাচনে অর্থাৎ ২০২৪ সালে তাঁকে আর প্রার্থী করেনি বিজেপি।