মতিলাল দাস
মৃত্যু মানে একটা অন্ধকার ঘর, যেখান থেকে কেউ ফিরে আসে না।
দরজার ওপারে কেমন জানি সুর বাজে, শুনি অথচ বুঝি না।
আমি বেঁচে থাকি নিঃশ্বাসে নিঃশ্বাসে, কিন্তু মৃত্যুভয় আমার শোবার পাশে বসে।
রাত হলে ওর পা টের পাই, বিছানার নিচে, খুব ধীরে ঘোরে।
জানালা খুললে আলো আসে,
কিন্তু মনে হয় ওর চোখও তাকিয়ে আছে।
মাথার ভেতর একেকদিন কুয়াশা জমে যায়,
জীবন আর মৃত্যু, দুই বন্ধু যেন, লুকোচুরি খেলছে।
জন্মদিনে কেক কাটার শব্দে কাঁটা হয়ে যায় বুক।
কেউ বলে—মৃত্যু শান্তি, কেউ বলে শূন্যতা,
আমি শুধু দেখি কাঁপা কাঁপা পায়ে একটা ছায়া হেঁটে যায়।
এই শহরের ট্রাফিক সিগনালে দাঁড়িয়ে থাকা মুখগুলোও জানে,
আজকেও কেউ না কেউ হারিয়ে যাবে,
চুপিচুপি, একটুও শব্দ না করে।
আমি আয়নায় তাকিয়ে থাকি,
দেখি চোখের কোণে এক অচেনা ক্লান্তি।
জীবন চিৎকার করে বাঁচতে চায়, অথচ
মৃত্যুভয় কানে ফিসফিস করে—
“আমি খুব নরম পায়ে আসবো, প্রস্তুত হও।”
তারপর ঘুম ভেঙে দেখি, আমার ছায়াটাও কাঁপছে।