এই দিনকাল: উত্তরপ্রদেশে (Uttar Pradesh) দুর্বিষহ জীবন হতে চলেছে পথকুকুরদের (Stray Dog)। একটি বেনজির নির্দেশিকা জারি করেছে যোগী আদিত্যনাথের সরকার। রাজ্য সরকারের তরফে বলা হয়েছে, যদি কোনও পথকুকুর প্রথম বার কোনও উস্কানি ছাড়াই মানুষকে কামড়ায়, তাহলে প্রাণীটিকে ১০ দিনের জন্য পশু কেন্দ্রে রাখা হবে। দ্বিতীয় বার যদি সেই কুকুর প্ররোচনা ছাড়া কামড়ায় তাহলে জীবনের বাকি দিনগুলি সেখানেই থাকতে হবে। কার্যত প্রাণীগুলিকে ‘যাবজ্জীবন কারাদণ্ড’ দেওয়া হবে। তবে কেউ যদি দত্তক নিতে রাজি হয় এবং রাস্তায় না ছাড়ার শর্তে রাজি হয়ে একটি হলফনামা জমা দেয়, তাহলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির হাতে পথকুকুরকে তুলে দেওয়া হবে।
সংবাদ মাধ্যম সূত্রে খবর, যে সমস্ত পথকুকুর আক্রমণাত্মক, সেগুলি নিয়ন্ত্রণের জন্য গত ১০ সেপ্টেম্বর সমস্ত গ্রামীণ ও শহুরে নাগরিক সংস্থাগুলিকে নির্দেশিকা পাঠিয়েছেন প্রধান সচিব অমৃত অভিজাত। তাতে বলা হয়েছে, যদি কোনও ব্যক্তি পথকুকুর কামড়ানোর পরে জলাতঙ্ক প্রতিরোধী টিকা নেন, তাহলে গোটা ঘটনার তদন্ত করা হবে এবং কুকুরটিকে স্থানীয় পশু জন্ম নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হবে।
প্রয়াগরাজ মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশনের পশুচিকিৎসা আধিকারিক বিজয় অমৃত রাজ এ বিষয়ে বলেন, ‘সেখানে নিয়ে যাওয়ার পর যদি ইতিমধ্যে না করা হয়ে থাকে, তাহলে পথকুকুরটিকে নির্বীজকরণ করা হবে। ১০ দিনের জন্য পর্যবেক্ষণে রেখে প্রাণীটির আচরণে নজর রাখা হবে। কুকুরটির দেহে মাইক্রোচিপ লাগানো হবে ছেড়ে দেওয়ার আগে, যাতে তার সমস্ত তথ্য থাকবে এবং আমরা তার অবস্থান চিহ্নিত করতে পারব।’ তবে যদি একই কুকুর কোনও মানুষকে – উসকানি ছাড়া দ্বিতীয়বার কামড়ায়, তবে প্রাণীটিকে আজীবন পশুকেন্দ্রে রেখে দেওয়া হবে।
কিন্তু কোনও উস্কানিমূলক আচরণ হয়েছে কিনা তা কীভাবে নির্ধারণ করা হবে? এই প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘তিন জনের একটি কমিটি গঠন করা হবে, যার মধ্যে থাকবেন এলাকার এক জন পশুচিকিৎসক, পশুদের বিষয়ে অভিজ্ঞতা রয়েছে এবং তাদের আচরণ বোঝেন এমন এক জন এবং মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশনের এক জন। তাঁরা যাচাই করবেন যে আক্রমণটি বিনা উস্কানিতে হয়েছে কিনা- যদি কেউ পাথর ছুঁড়ে মারার পরে প্রাণীটি কামড়ায়, তবে তা বিনা উস্কানিতে আক্রমণ হিসাবে বিবেচিত হবে না।’
নির্দেশিকায় আরও বলা হয়েছে, এই ধরণের কুকুর দত্তক নেওয়া যেতে পারে, তবে যে ব্যক্তি দত্তক নেবেন নাম, ঠিকানা-সহ তাঁকে সমস্ত বিবরণ জানাতে হবে। পাশাপাশি কুকুরটিকে রাস্তায় ছেড়ে দেওয়া হবে না এই মর্মে একটি হলফনামা জমা দিতে হবে। নথিভুক্ত করা হবে কুকুরের মাইক্রোচিপের বিবরণও। যদি ছেড়ে দেওয়া হয়, তবে প্রাণীটিকে দত্তক গ্রহণকারীর বিরুদ্ধেও আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।