Sheikh Hasina: ফাঁসির সাজাপ্রাপ্ত শেখ হাসিনাকে কি হস্তান্তর করবে ভারত?

এই দিনকাল: জুলাই গণহত্যাকাণ্ডে বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে (Sheikh Hasina) মৃত্যদণ্ডের সাজা শুনিয়েছে সেদেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। সোমবার, অর্থাৎ ১৭ নভেম্বর ট্রাইব্যুনাল এই সাজা শুনিয়েছে। হাসিনার পাশাপাশি মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে সেদেশের প্রাক্তন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানকেও। হাসিনার শাসনকালে পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) পদে ছিলেন চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন। তাঁকে দেওয়া হয়েছে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড। কিন্তু ফাঁসির সাজাপ্রাপ্ত মুজিবকন্যা বর্তমানে ভারতে আশ্রয়ে রয়েছেন। নয়াদিল্লি তাঁকে ইউনুস সরকারের হাতে তুলে দেবে কিনা তা নিয়ে শুরু হয়েছে চর্চা।

সোমবার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের রায় ঘোষণার পর শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামানকে হস্তান্তরের জন্য ভারতের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশের বিদেশ মন্ত্রক। এক বিবৃতিতে ঢাকা বলেছে, ‘মানবতাবিরোধী অপরাধে সাজাপ্রাপ্ত এই ব্যক্তিদের দ্বিতীয় কোনও দেশ আশ্রয় দিলে তা হবে অত্যন্ত অবন্ধুসুলভ আচরণ এবং ন্যায়বিচারের প্রতি অবজ্ঞার শামিল। আমরা ভারত সরকারের প্রতি আহ্বান জানাই, তারা যেন অনতিবিলম্বে দণ্ডপ্রাপ্ত এই দুই ব্যক্তিকে বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করে।’

এদিকে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মৃত্যুদণ্ডের নির্দেশ প্রসঙ্গে একটি বিবৃতি প্রকাশ করেছে ভারতের বিদেশ মন্ত্রক। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘একটি নিকট প্রতিবেশী হিসেবে ভারত বাংলাদেশে শান্তি, গণতন্ত্র, অন্তর্ভুক্তি, স্থিতিশীলতাসহ বাংলাদেশের জনগণের সর্বোত্তম স্বার্থের বিষয়ে অঙ্গীকারবদ্ধ। এই লক্ষ্য অর্জনে আমরা সব সময় সব অংশীদারের সঙ্গে গঠনমূলকভাবে যুক্ত থাকব।’

উল্লেখ্য, ১৭ নভেম্বর বিচারপতি গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ হাসিনা-সহ তিন জনের সাজা ঘোষণা করে। ট্রাইব্যুনালের বাকি দুই সদস্য হলেন বিচারপতি মহম্মদ শফিউল আলম মাহমুদ ও বিচারক মহম্মদ মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী। এদিন স্থানীয় সময় দুপুর সাড়ে ১২টায় রায় পড়া শুরু করেন বিচারপতি। ২টা ৫৪ মিনিটে রায় পড়া শেষ হয়। যে তিন জনের বিরুদ্ধে এদিন ট্রাইব্যুনাল রায় দিয়েছে তার মধ্যে দুজন অর্থাৎ শেখ হাসিনা এবং আসাদুজ্জামান পলাতক। দুজনই বর্তমানে ভারতে রয়েছেন। অপর অভিযুক্ত চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন আগেই গ্রেফতার হয়েছেন। তিনি নিজের দোষ স্বীকার করে রাজসাক্ষী হয়েছেন। সে কারণেই তাঁর শাস্তি লাঘব করে ৫ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন তাঁর জবানবন্দিতে জানিয়েছেন, ২০২৪ সালের জুলাই মাসে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন দমন করতে মারণাস্ত্র ব্যবহারের নির্দেশ দিয়েছিলেন শেখ হাসিনা। তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী এই নির্দেশ দেন সেই সময়কার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান। তিনি প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ পৌঁছে দেন আব্দুল্লাহ আল মামুনকে। তদন্তে জানা গিয়েছে, শেখ হাসিনার নির্দেশে ২০২৪ সালের জুলাই ও আগস্ট মাসে মারণাস্ত্র ব্যবহার করে নিরীহ, নিরস্ত্র দেড় হাজার ছাত্র-জনতাকে হত্যা করা হয়েছিল। পুলিশের দমন পীড়নে জখম হয়েছিলেন প্রায় ৩০ হাজার মানুষ।

প্রসঙ্গত, ছাত্র জনতার বিক্ষোভের মুখে পড়ে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট বাংলাদেশ ছেড়ে ভারতে পালিয়ে আসেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তার পর থেকে ভারতেই রয়েছেন তিনি। হাসিনাকে বাংলাদেশে ফেরত চেয়ে আগেও মহম্মদ ইউনুস সরকারের তরফে নয়াদিল্লিকে চিঠি লেখা হয়েছিল। যদিও ভারত এ বিষয়ে কিছু জানায়নি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *