Tag Archives: Pinarayi Vijayan

Poverty: দেশের ইতিহাসে প্রথম চরম দারিদ্র‍্যসীমা থেকে মুক্ত কেরল

এই দিনকাল: স্বাধীন ভারতবর্ষে এই প্রথম কোনও রাজ্য চরম দারিদ্র্যসীমা (extreme poverty) থেকে মুক্ত হল। বামশাসিত কেরলে চরম দারিদ্র্যসীমার নীচে আর কোনও মানুষ নেই। আগামী ১ নভেম্বর সরকারি ভাবে সে রাজ্যে এই বেনজির অর্জনের কথা ঘোষণা করা হতে চলেছে। 

১ নভেম্বর দিনটি এমনিতে ‘কেরল দিবস’ হিসেবে উদযাপিত হয়। পিনারাই বিজয়ন সরকারের সিদ্ধান্ত, ওই দিনেই রাজ্যকে চরম দারিদ্র‍্যসীমা মুক্ত হিসেবে ঘোষণা করা হবে। অত্যন্ত দারিদ্র‍্যের মধ্যে থাকা ৬৪,০০৬ টিরও বেশি পরিবারের উন্নয়ন ঘটানো হয়েছে। এই পরিবারগুলির জন্য খাদ্য, চিকিৎসা এবং বাসস্থানের ব্যবস্থা করা হয়েছে সরকারের তরফে। কেরলের মন্ত্রী এমবি রাজেশ এই অর্জনকে গর্বের মুহূর্ত বলে অভিহিত করেছেন। তাঁর দাবি, কেরল দেশের মধ্যে শুধু প্রথম চরম দারিদ্র্যদীমার উর্ধ্বে ওঠেনি, বরং আন্তর্জাতিক ভাবে চিনের পরে বিশ্বে দ্বিতীয় স্থানে জায়গা করে নিয়েছে চরম দারিদ্র্য দূরীকরণের ক্ষেত্রে। 

বামশাসিত রাজ্যটি মানুষকে দারিদ্র্য থেকে মুক্ত করার জন্য একাধিক প্রকল্প হাতে নিয়েছে। বিশেষ করে এক্সট্রিম পোভার্টি ইরাডিকেশন প্রজেক্ট বা ইপিইপি চালু করা হয় সরকারি ভাবে। এই প্রকল্পের লক্ষ্য হল চরম দারিদ্র্যসীমার মধ্যে থাকা ব্যক্তি ও পরিবারকে চিহ্নিত করে সরকারি প্রকল্পের সুফল পৌঁছে দেওয়া। সংবাদ সংস্থাকে রাজেশ বলেন, ‘ইপিইপি ছিল বর্তমান বাম সরকারের প্রথম মন্ত্রিসভার প্রথম সিদ্ধান্ত। এটিকে চরম দারিদ্র্য দূরীকরণের জন্য একটি পাঁচ বছরের পরিকল্পনা হিসেবে ঠিক করা হয়েছিল। বর্তমানে, আমরা আমাদের যা লক্ষ্য ছিল তার ১০০ শতাংশ অর্জন করতে পেরেছি।’ 

উল্লেখ্য, অত্যন্ত দরিদ্র মানুষকে চিহ্নিত করতে কেরলজুড়ে সমীক্ষা চালানো হয়েছিল। সেই সমীক্ষায় চিহ্নিত করা হয় ৬৪,০০৬ পরিবারকে। এই পরিবারগুলির মোট জনসংখ্যা ১,০৩,০৯৯ জন। খাদ্য, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, আয় এবং আবাসনের ক্ষেত্রে দারিদ্র‍্যসীমা থেকে পরিবারগুলি এখন বেরিয়ে এসেছে বলে মন্ত্রী জানান।

এই প্রকল্পের কথা ভেবেছিলেন স্বয়ং কেরলের মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন। তিনি এই বিষয়ে বিভিন্ন দফতরের মধ্যে সমন্বয় রেখে প্রতিটি পর্যায়ে কাজের অগ্রগতি পর্যালোচনা করেন। রাজেশ বলেন, সরকারের বিভিন্ন সামাজিক সুরক্ষা প্রকল্পের একত্রীকরণ এবং বিভিন্ন দফতরের কাজকর্মের সমন্বয় এই প্রকল্পকে সফল করে তুলেছে। মন্ত্রী বলেন, সমাজের সবচেয়ে প্রান্তিক এবং দুর্বল অংশ, যার মধ্যে যাযাবর শ্রেণীও রয়েছে। তারা চালু থাকা সরকারি প্রকল্প সম্পর্কে জানেন না, বা সুবিধা পেতে কীভাবে আবেদন করতে হবে তাও জানেন না, তাদেরকে চিহ্নিত করে এই উদ্যোগের আওতায় আনা হয়েছে।

তিনি বলেন, ‘প্রতিটি পরিবারের চাহিদা অনুসারে ছোট ছোট পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। কিছু পরিবারের জন্য, চিকিৎসা, কিছু পরিবারের জন্য খাদ্য গুরুত্ব পেয়েছে। তবে বিপুল সংখ্যকের আবাসন এবং উপার্জনের প্রয়োজন। এমনকি এমন ব্যক্তিরাও ছিলেন যারা হাসপাতালে যাওয়ার জন্য সাহায্য চেয়েছিলেন।’ নীচুতলায় করা সমীক্ষায় দেখা গেছে যে এই ধরণের পরিবারগুলির ৩৫ শতাংশ আয় সংক্রান্ত বঞ্চনার সম্মুখীন, ২৪ শতাংশের স্বাস্থ্য সংক্রান্ত বিষয়ে সমস্যা, ২১ শতাংশের খাদ্যের প্রয়োজন। এ ছাড়া বাসস্থান সংক্রান্ত সমস্যার সম্মুখীন ১৫ শতাংশ পরিবার।