এই দিনকাল: দেশে নতুন করে মাথাচড়া দিচ্ছে (Illegal Migrants) অনুপ্রবেশ ইস্যু। এমনিতে বিজেপিশাসিত রাজ্যগুলিতে বাঙালি শ্রমিকদের বাংলাদেশি সন্দেহে হেনস্থা করা হচ্ছে বলে বিগত কয়েক দিন ধরে অভিযোগ উঠছে। ইতিমধ্যে বিষয়টি নিয়ে সরব হয়েছে বাংলার শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস এবং অন্যতম বিরোধী দল সিপিএম। বাংলা ভাষায় কথা বলা মানে যে বাংলাদেশি নয়, তা নিয়ে আওয়াজ তুলেছে জোড়াফুল শিবির ও বামেরা। এই আবহে শুক্রবার রাজ্যে এসে দুর্গাপুরের সভা থেকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী অনুপ্রবেশ প্রসঙ্গে সরব হয়েছেন। বাংলায় এসে মোদী বলেছেন, অনুপ্রবেশকারীদের বিরুদ্ধে সংবিধান অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তার ২৪ ঘন্টা যেতে না যেতে এবার সামনে এল বিজেপিশাসিত ত্রিপুরা সরকার কর্তৃক অবৈধ বাংলাদেশি ও রোহিঙ্গাদের চিহ্নিত করতে বিশেষ টাস্ক ফোর্স গঠনের খবর।
সূত্রের খবর, ১৫ জন সদস্যকে নিয়ে পশ্চিম ত্রিপুরা জেলায় পুলিশের টাস্ক ফোর্স গঠন করা হয়েছে। যাদের কাজ হবে মূলত বাংলাদেশ এবং মায়ানমার থেকে অবৈধ ভাবে যারা এসে ভারতে রয়েছে তাদেরকে চিহ্নিত করা। শুধু তাই নয় ভারত থেকে তাদেরকে নিজ দেশে ফেরত পাঠানোর লক্ষ্যে ওই দল কাজ করবে। এই টাস্ক ফোর্স গঠনের নির্দেশ দিয়েছেন পশ্চিম ত্রিপুরা জেলার পুলিশ সুপার কিরণ কুমার। ত্রিপুরার ওই জেলার ১৫টি থানার ওসিকে নিয়ে এই বিশেষ দল গঠন করা হয়েছে। এই টিমের মাথায় রয়েছেন জেলা পুলিশের গোয়েন্দা শাখার ডেপুটি সুপার দেবাশিস সাহা।
কী ভাবে কাজ করবে এই বিশেষ দল?
সূত্রের খবর, অবৈধ ভাবে কোনও বাংলাদেশি বা রোহিঙ্গা ভারতে রয়েছে, প্রথমে তাদেরকে শনাক্ত করবে এই দল। এর পর তাঁদের বায়োমেট্রিক তথ্য সংগ্রহ করা হবে। পরবর্তী ধাপে সেই তথ্য ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের বিদেশি শনাক্তকরণ পোর্টালে তুলে দেওয়া হবে। সব শেষে তাঁরা যে দেশ থেকে ভারতে অনুপ্রবেশ করেছে, সেই দেশে ফেরত পাঠানোর জন্য বিএসএফ-এর হাতে তুলে দেওয়া হবে।
প্রসঙ্গত, সম্প্রতি পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ভারতীয় বাঙালিদের হেনস্থার প্রতিবাদে কলকাতায় পদযাত্রা করেছেন। বাঙালিদের উপর নির্যাতন বন্ধ না হলে কড়া আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তিনি। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, বছর ঘুরলেই যেহেতু রাজ্যে বিধানসভা ভোট। তাই বাঙালি অস্মিতাকে হাতিয়ার করে তৃণমূল কংগ্রেস রাজনীতির ময়দানে ঝাঁপাতে চাইছে। অন্যদিকে বিজেপিও অনুপ্রবেশ ইস্যুতে সরব হলেও বাঙালি অস্মিতাকে দূরে ঠেলতে চাইছে না। তা শুক্রবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ভাষণ থেকেও স্পষ্ট। কারণ তিনি বক্তৃতা শুরু করেছিলেন ‘জয় মা কালী’ ‘জয় মা দুর্গা’ বলে। শুধু তাই নয় বাঙালি অস্মিতার প্রশ্নে বিজেপি যে কোনও আপোস করবে না তাও বুঝিয়ে দিয়েছেন মোদী।