Tag Archives: Maoist

Naxal leader Sujatha surrenders: ৪৩ বছর ছিলেন আন্ডারগ্রাউন্ডে, আত্মসমর্পণ সেই মাওবাদী নেত্রী সুজাতার, আদর্শের টানে বেছে নিয়েছিলেন কঠিন লড়াইয়ের পথ

এই দিনকাল: ৪৩ বছর ধরে তিনি ছিলেন আন্ডারগ্রাউন্ডে। অবশেষে আত্মসমর্পণ করলেন সেই মাওবাদী নেত্রী সুজাতা (Sujatha) ওরফে পোথুলা পদ্মাবতী (Pothula Padmavathi)। ৬২ বছর বয়সী সুজাতার আরও একটি পরিচয় রয়েছে, তিনি নিহত মাওবাদী নেতা কিষেণজির স্ত্রী। শনিবার হায়দরাবাদে তেলঙ্গানার ডিজিপি জিতেন্দ্রের উপস্থিতিতে পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণ করেন তিনি। 

পুলিশ সূত্রে খবর, সুজাতা সিপিআই (মাওবাদী) দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য (সিসিএম) হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন এবং দলের কেন্দ্রীয় কমিটির একমাত্র মহিলা সদস্য। তাঁর মাথার দাম ঘোষণা করা হয়েছিল ২৫ লক্ষ টাকা। আত্মসমর্পণের পর তাঁকে সেই অর্থ দেওয়া হবে। তাঁর স্বামী কিষেণজি, যিনি সিসিএম এবং পশ্চিমবঙ্গ কমিটির প্রধান ছিলেন, ২০১১ সালে এক এনকাউন্টারে নিহত হন। সুজাতা তেলঙ্গানার জোগুলাম্বা গাদওয়াল জেলার গাট্টু মণ্ডলের পেঞ্চিকালপাডু গ্রামের বাসিন্দা। তাঁর বাবা থিম্মা রেড্ডি ছিলেন কৃষক পরিবারের সন্তান। তাঁর অনেকটাই কৃষিজমি ছিল। গ্রামের পোস্টমাস্টার হিসেবেও কাজ করতেন থিম্মা। সুজাতার বড় ভাই পোথুলা শ্রীনিবাস রেড্ডি ১৯৮২ সালে প্রায় দুই মাস সিপিআই (এমএল) পিপলস ওয়ার গ্রুপের সঙ্গে কাজ করেছিলেন।

সুজাতা মাল্লাজুলা কোটেশ্বর রাও ওরফে কিষেণজির সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। যিনি একজন সিনিয়র মাওবাদী নেতা শুধু নন, সিপিআই (মাওবাদী) এর পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য কমিটির সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন। কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্যও ছিলেন কিষেণজি। ২০১১ সালের ২৪ নভেম্বর পশ্চিমবঙ্গের পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার বাংলা-ঝাড়খণ্ড সীমান্তের কাছে বুড়িশোলের জঙ্গলে পুলিশের সঙ্গে গুলি বিনিময়ে তিনি নিহত হন।

গাদোয়ালের সরকারি জুনিয়র কলেজে ইন্টারমিডিয়েটে দ্বিতীয় বর্ষে পড়ার সময় সুজাতা তাঁর তুতো ভাই প্যাটেল সুধাকর রেড্ডি ওরফে সূর্যম এবং পোথুলা সুদর্শন রেড্ডি ওরফে আরকে-এর মাধ্যমে মার্কসবাদী-লেনিনবাদী মতাদর্শে প্রভাবিত হন। সূর্যম নিজেও একজন সিসিএম ছিলেন এবং ২০০৯ সালে গুলি বিনিময়ের সময় নিহত হন। তাঁদের আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে সুজাতা ১৯৮২ সালের ডিসেম্বরে সিপিআই (এমএল) পিপলস ওয়ার গ্রুপে যোগ দেন।

তেলঙ্গানার ডিজিপি জিতেন্দ্র বলেন, ‘২০২৫ সালের মে মাসে, স্বাস্থ্যের অবনতির কারণে, সুজাতা সংগঠন ছাড়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেন। প্রাক্তন সিসিএম পুল্লুরি প্রসাদ রাও ওরফে চন্দ্রান্নার মাধ্যমে তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে কেন্দ্রীয় কমিটির কাছে তাঁর অনুরোধ জানান। স্বাস্থ্যগত কারণে সংগঠন ছেড়ে সরকারি সহায়তায় মূলধারার জীবন যাপনে পুনরায় ফেরার ইচ্ছা প্রকাশ করেন তিনি। তাঁর এই সিদ্ধান্ত কয়েক দশক ধরে আন্ডারগ্রাউন্ডে থাকার পর তাঁর সুস্থতাকে প্রাধান্য দেওয়ার ব্যক্তিগত প্রয়োজনের প্রতিফলন। তিনি ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন, সরকারের পুনর্বাসন ব্যবস্থা গ্রহণ করে স্বাভাবিক জীবন যাপনে ফেরার, স্বাস্থ্যের যত্ন নেওয়া এবং পরিবারের সঙ্গে শান্তিপূর্ণভাবে বসবাস করার।’

Tippiri Tirupathi: সিপিআই (মাওবাদী) দলের সাধারণ সম্পাদক হতে পারেন তেলেঙ্গানার দলিত নেতা টিপ্পিরি তিরুপতি

এই দিনকাল: নিষিদ্ধ ঘোষিত সিপিআই (মাওবাদী) দলের নতুন সাধারণ সম্পাদক হতে পারেন দলিত সমাজ থেকে উঠে আসা তেলেঙ্গানার জাগতিয়াল জেলার টিপ্পিরি তিরুপতি (Tippiri Tirupathi) ওরফে দেবুজী। গত ২১ মে ছত্তিশগড়ে নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে নিহত হয়েছেন নাম্বালা কেশব রাও ওরফে বাসবরাজু। ৬০ ছুঁইছুঁই দেবুজি তাঁর জায়গায় দায়িত্ব নেবেন।

সংবাদ মাধ্যম সূত্রে খবর, সিপিআই (মাওবাদী) এর কেন্দ্রীয় কমিটি তাঁদের নতুন প্রধান হিসেবে দেবুজীর নামে সিলমোহর দিয়েছে। দেবুজী পূর্বতন করিমনগর জেলার দ্বিতীয় নেতা যিনি মাওবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক পদে বসতে চলেছেন। প্রথম জন ছিলেন জাগতিয়ালের বীরপুরের বাসিন্দা মুপ্পলা লক্ষ্মণ রাও ওরফে গণপতি, যিনি ২০১৮ সালে বয়স এবং স্বাস্থ্যের কারণে পদত্যাগ করার আগে পর্যন্ত দলের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন।

দেবুজী জগতিয়াল জেলার কোরুতলা শহরের আম্বেদকর নগরের বাসিন্দা। মাদিগা সমাজের এই নেতা ইন্টারমিডিয়েট স্তর পর্যন্ত পড়াশোনা করে ১৯৮০-এর দশকের গোড়ার দিকে রাজনীতিতে যোগ দেন। কলেজে পড়াকালীন সময়ে সক্রিয় ভাবে ছাত্র রাজনীতি করেন। করিমনগরে এবিভিপি কর্মীদের সঙ্গে সহিংস সংঘর্ষেও জড়িয়ে পড়েন দেবুজী। ১৯৮৩ সালে, তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে সিপিআই-এমএল (পিপলস ওয়ার গ্রুপ)-এ যোগ দেন এবং আন্ডারগ্রাউন্ডে চলে যান এবং মাওবাদী আন্দোলনে চার দশকের দীর্ঘ কর্মজীবন শুরু করেন।

গড়চিরোলিতে একজন দালাম সদস্য হিসেবে যেমন দায়িত্ব পালন করেছেন তিরুপতি ওরফে দেবুজী, তেমনই সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এরিয়া এবং বিভাগীয় কমান্ডার হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি। পরে দণ্ডকারণ্য জোনে নেতৃত্বের ভূমিকা গ্রহণ করেন। ২০০১ সালের মধ্যে, সিপিআই (মাওবাদী) এর কেন্দ্রীয় কমিটি এবং সংগঠনের সশস্ত্র শাখার শক্তিশালী কেন্দ্রীয় মিলিটারি কমিশন (সিএমসি) উভয়ের সঙ্গেই যুক্ত হন তিরুপতি। তিনি ২০০৭ সালের ইউনিটি কংগ্রেসেও অংশ নেন। অবদান রাখেন কেন্দ্রীয় টেকনিক্যাল কমিটিতেও।

গেরিলা যুদ্ধে দক্ষ দেবুজী আন্ডারগ্রাউন্ডে থেকে ‘আওয়ামী জং’ নামে প্রকাশনা সম্পাদনা করতেন। এ ছাড়া সিএমসির তরফে নিয়মিতভাবে বিবৃতি জারি করতেন। দেবুজী তেলেগু, হিন্দি এবং গোন্ডি ভাষায় কথা বলতে দক্ষ। তাঁকে শেষবার দেখা গিয়েছিল ছত্তিশগড়ের মাদ অঞ্চলে একে ৪৭-সহ। তাঁর খোঁজে কেউ তথ্য দিতে পারলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে ২৫ লক্ষ টাকা পুরস্কার দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছে নিরাপত্তা সংস্থাগুলি। তিরুপতি ওরফে দেবুজীর পদোন্নতি এমন সময়ে হল যখন কিনা ভারতে মাওবাদী আন্দোলন তীব্র বিপর্যয়ের মুখোমুখি হচ্ছে।