এই দিনকাল: নেপালের (Nepal) বর্তমান সরকারের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ চরম আকার নিয়েছে। সোমবার থেকে শুরু হওয়া সেই বিক্ষোভ মঙ্গলবারও জারি রয়েছে। ইতিমধ্যে অন্তত ১৯ জন বিক্ষোভকারীর মৃত্যু হয়েছে। নেপালের প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলির বাসভবনে হামলা ও অগ্নি সংযোগের ঘটনাও ঘটেছে। ছাত্র যুবদের বিক্ষোভ থেকে প্রধানমন্ত্রী ওলির পদত্যাগের দাবি জানানো হয়েছিল। বিক্ষোভকারীদের সেই দাবি মেনে মঙ্গলবার পদত্যাগ করেন কেপি শর্মা ওলি। কিন্তু তাতেও বিক্ষোভ থামেনি। একাধিক মন্ত্রীর বাসভবনে হামলা ও অগ্নি সংযোগ করা হয়েছে। নেপালের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ঝালানাথ খানালের বাসভবনে বিক্ষুব্ধ জনতা আগুন ধরিয়ে দেওয়ায় বাড়ির মধ্যে জীবন্ত পুড়ে মৃত্যু হয়েছে তাঁর স্ত্রী রাজ্যলক্ষ্মী চিত্রকরের।
অন্য দিকে, ওলি ইস্তফা দেওয়ায় নেপালের নতুন প্রধানমন্ত্রী কে হবেন তা নিয়ে চলছে চর্চা। এ ক্ষেত্রে সামনে আসছে বলেন্দ্র শাহের নাম। ৩৫ বছর বয়সী বলেন্দ্র বর্তমানে কাঠমান্ডুর মেয়র। বিক্ষোভকারীদের একাংশ চাইছেন নেপালের প্রধানমন্ত্রীর চেয়ারে বসুন বলেন্দ্র। উল্লেখ্য, ২০২২ সালে কাঠমান্ডুর মেয়র নির্বাচনে নির্দল প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে ৬১ হাজার ভোটে জয়ী হয়েছিলেন তিনি। ১৯৯০ সালে নেপালের কাঠমান্ডুতে জন্মগ্রহণ করেন বলেন্দ্র। সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিষয়ে পড়াশোনা করেন তিনি। এমনকি শিক্ষা লাভের জনক্স ভারতেও আসেন। নেপালে সুরকার হিসাবেও যথেষ্ট জনপ্রিয় বলেন্দ্র। দুর্নীতি এবং আর্থিক বৈষম্য নিয়ে গানে সুরারোপ করেছেন তিনি।
ঠিক কী নিয়ে বিক্ষোভের সূত্রপাত?
সমাজমাধ্যমের উপর চাপানো নিষেধাজ্ঞা ঘিরে বিক্ষোভের সূচনা হলেও এটিই একমাত্র কারণ নয়। বিক্ষোভের পিছনে রয়েছে একাধিক কারণ। দেশে বেকারত্ব, জলবায়ু সংক্রান্ত সমস্যা, প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলার ব্যবস্থাপনা নিয়ে ক্ষুব্ধ নেপালবাসী। তরুণদের অনেকেই নেতাদের দুর্নীতি নিয়ে অসন্তুষ্ট। এই সমস্ত কারণে পুঞ্জীভূত ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ হয়েছে চলমান বিদ্রোহে। যদিও সমাজ মাধ্যম নিয়ে যে নিষেধাজ্ঞা চাপানো হয়েছিল তা প্রত্যাহার করে নিয়েছে কেপি শর্মা ওলির সরকার। মূলত সাইবার অপরাধ, ভুয়ো এবং বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়ানো বন্ধ করতে গত এক বছরেরও বেশি সময় ধরে বিভিন্ন সমাজ মাধ্যমের উপর নিয়ন্ত্রণ আনার চেষ্টা করেছে নেপালের সরকার। দেশটির সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে গত আগস্ট মাসেই নেপাল সরকার বিভিন্ন সমাজমাধ্যম সংস্থার রেজিস্ট্রেশন-এর জন্য উদ্যোগী হয়। সরকারের নির্দেশ মেনে টিকটক, ভাইবার, উইটক, নিমবাজ এবং পপ্পো লাইভ এর মতো সমাজ মাধ্যম গুলি রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন করে নেয়। তবে কোপ পড়ে ফেসবুক, এক্স, ইউটিউব এর মতো সমাজ মাধ্যমগুলির উপর।