এই দিনকাল: উত্তরপ্রদেশে (Uttar Pradesh) এক দলিত (Dalit) যুবককে বাধ্য করা হল জুতো চাটতে। শুধু তাই নয়, তাঁকে বেধড়ক মারধর করে হাত ভেঙে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ। আর এই গোটা ঘটনায় অভিযোগের তীর উচ্চবর্ণের লোকজনের বিরুদ্ধে। ঘটনার ১২ দিন পর পুলিশের শীর্ষ কর্তাদের নির্দেশে দায়ের করা হয়েছে অভিযোগ। উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ (Chief Minister Yogi Adityanath) একাধিক বার দাবি করেছেন রাজ্যে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি দৃঢ় ভাবে রয়েছে। কিন্তু তার পরেও, হামিরপুর জেলার এই ঘটনা পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে দিয়েছে।
সংবাদ মাধ্যম সূত্রে খবর, হামিরপুরের সুমেরপুর এলাকায় গত ৫ অক্টোবর ঘটনাটি ঘটেছে। অভিযোগ, উচ্চবর্ণের একদল লোক এক দলিত যুবককে জাত তুলে অপমান করে। সেই সঙ্গে মারধরও করে। সংবিধান প্রণেতা ডক্টর বিআর আম্বেদকরের ছবি ছিঁড়ে ফেলা সংক্রান্ত পুরনো বিবাদের জেরে অভিযুক্তরা ওই দলিত যুবককে জুতো চাটতে বাধ্য করে এবং পরে তাঁকে মারধর করে একটি হাত ভেঙে দেয়।
রিপোর্ট অনুসারে, আক্রান্ত যুবক সিমনৌদি গ্রামের বাদিন্দা। তাঁর নাম উমেশ বাবু ভার্মা। অভিযোগ, তিনি বাজারে গিয়েছিলেন, সেই সময় রাস্তার পাশে বসে ছিলেন অভয় সিং এবং আরও দুই অজ্ঞাত পরিচয়ের ব্যক্তি। তাঁরা উমেশকে থামিয়ে জুতো চাটতে বাধ্য করে। উমেশ বলেন, ‘তাঁরা আমাকে জাত তুলে অপমান করতে শুরু করে, জুতো চাটতে বাধ্য করে। তারপর আমার উপর আক্রমণ করে আমার হাত ভেঙে দেয়।’
আক্রান্ত যুবকের দাবি, ঘটনার পর অভিযোগ জানানোর জন্য তিনি একাধিক বার স্থানীয় পুলিশের কাছে গিয়েছিলেন। কিন্তু তাঁর কথা পুলিশ শুনতে চায়নি বলে অভিযোগ। উমেশ বলেন, ‘আমি বেশ কয়েকবার থানায় গিয়েছিলাম, কিন্তু তাঁরা আমার কথা শোনেনি।’ অবশেষে পুলিশ সুপার ডঃ দীক্ষা শর্মার সঙ্গে দেখা করে গোটা ঘটনার কথা জানান আক্রান্ত। তাঁর নির্দেশে পরে স্থানীয় পুলিশ অভয় সিং এবং আরও দুজনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে। বিষয়টি নিয়ে সুমেরপুর থানার অফিসার অনুপ সিং বলেন, ‘আক্রান্ত যুবকের অভিযোগের ভিত্তিতে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। তদন্ত চলছে।’
অন্য দিকে অভিযোগ দায়ের করতে দেরি করায় স্থানীয়দের মধ্যে ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে। তাঁদের দাবি, জাতিগত হিংসার পরেও প্রশাসন কীভাবে তা উপেক্ষা করছে তার দৃষ্টান্ত এই ঘটনা। উমেশের পরিবার অভিযুক্তদের অবিলম্বে গ্রেফতারের দাবি জানিয়েছে। সেই সঙ্গে প্রথমে অভিযোগ নিতে অস্বীকার করায় সংশ্লিষ্ট পুলিশ আধিকারিকদের বিরুদ্ধেও কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছে।