এই দিনকাল: সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে বিষ ওগরাচ্ছে হিন্দুত্ববাদী সংগঠন রাষ্ট্রীয় স্বয়ং সেবক সঙ্ঘ (RSS), এমনটাই অভিযোগ কংগ্রেসের (Congress)। রবিবার দলটি আরএসএস-এর নিন্দা জানিয়েছে। হাত শিবিরের অভিযোগ, সংগঠনটি তাদের মালায়ালাম ভাষায় প্রকাশিত ম্যাগাজিন ‘কেশরী’তে সংখ্যালঘু খ্রিস্টান (Christian) সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে লেখা প্রকাশ করেছে।
কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক কেসি ভেনুগোপালের অভিযোগ, ‘কেশরী’ পত্রিকায় প্রকাশিত সাম্প্রতিক নিবন্ধের পিছনে আরএসএসের গোপন উদ্দেশ্য রয়েছে। সেটি হল সমাজে ঘৃণা ছড়িয়ে দেওয়া এবং ধর্মান্তরের নামে খ্রিস্টানদের দেশের শত্রু হিসাবে তুলে ধরা। কড়া ভাষায় একটি বিবৃতি দিয়ে কংগ্রেস নেতা জানতে চেয়েছেন, আরএসএস সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে নিবন্ধে যে অবস্থান নিয়েছে, বিজেপি কি তা প্রত্যাখ্যান করতে প্রস্তুত?
হিন্দুত্ববাদী সংগঠনটির সমালোচনা করে ভেনুগোপাল বলেন, ‘সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে বিষ ওগরানোয় অভ্যস্ত আরএসএস (এই নিবন্ধের মাধ্যমে) ঘোষণা করছে যে তারা শেষ নিঃশ্বাস পর্যন্ত তাদের কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাবে।’ তাঁর অভিযোগ, এই নিবন্ধটি ডানপন্থী সংগঠনের ‘খ্রিস্টান-বিরোধী অবস্থান’ আরও খোলাখুলি ভাবে প্রকাশ্যে এনে দিয়েছে। ছত্তিশগড় থেকে দুই ক্যাথলিক সন্ন্যাসিনীকে সম্প্রতি গ্রেফতার এবং মুক্তি দেওয়ার কথা উল্লেখ করে ভেনুগোপাল বলেন, রাজ্য বিজেপি প্রধান-সহ যারা তাঁদের সঙ্গে ছবি তুলেছিলেন, তাদের আসল চেহারা এই নিবন্ধের মাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। তিনি রাজ্যের মানুষকে সঙ্ঘ পরিবারের সংগঠনগুলির অন্ধ ‘সংখ্যালঘু-বিরোধী’ মনোভাবের বিরুদ্ধে সতর্ক থাকার আবেদন জানিয়েছেন।
উল্লেখ্য ‘কেশরী’ পত্রিকায় ডানপন্থী সংগঠন হিন্দু ঐক্যবেদীর রাজ্য সহ-সভাপতি ই এস বিজু বিতর্কিত নিবন্ধটি লিখেছিলেন। তা প্রকাশ হওয়ার তিন দিনের মধ্যে আরএসএসের বিরুদ্ধে সমালোচনায় সরব হল কংগ্রেস। নিবন্ধটির শিরোনাম ছিল, ‘বিশ্বজুড়ে ধর্মান্তরের সময়রেখা’। এই প্রবন্ধে গত কয়েক বছর ধরে দেশে ঘটে যাওয়া ধর্মান্তরের জন্য খ্রিস্টান সম্প্রদায়কে নিশানা করেছেন লেখক।
ধর্মান্তর এবং মানব পাচারের অভিযোগে ছত্তিশগড়ে কেরলের দুই ক্যাথলিক সন্ন্যাসিনীকে গ্রেফতারের সাম্প্রতিক ঘটনার কথা উল্লেখ করে প্রবন্ধে অভিযোগ করা হয়, রাজ্যের রাজনৈতিক ও ধর্মীয় নেতৃত্ব এই ঘটনায় ‘একটি নির্দিষ্ট এজেন্ডার সঙ্গে ধর্মীয় ও মানসিক দ্বন্দ্ব’ উসকে দেওয়ার চেষ্টা করেছে। দেশের আইন সকলের জন্য সমান উল্লেখ করে নিবন্ধে বলা হয়েছে, ‘এটি ভারতীয় সংবিধানের সারাংশকে প্রশ্নবিদ্ধ করে। রাজ্যের বর্তমান পরিস্থিতি হল সংখ্যালঘু ধর্মের জন্য এক বিচার এবং সংখ্যাগরিষ্ঠদের জন্য অন্য বিচার।’ এতে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, ধর্মান্তর যদি ধর্মীয় শক্তির অধিকার হয়, তবে এর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ করা হিন্দুদের অধিকার এবং কর্তব্য। প্রবন্ধে সংবিধান সংশোধনের পক্ষেও সওয়াল করা হয়েছে।