এই দিনকাল: সম্প্রতি মেদিনীপুরের বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (Vidyasagar University) স্নাতক স্তরে পরীক্ষার প্রশ্নপত্রে বিপ্লবীদের ‘সন্ত্রাসবাদী’ আখ্যা দেওয়া হয়েছিল। যা নিয়ে তুমুল বিতর্ক তৈরি হয় শিক্ষা জগত এবং রাজনৈতিক মহলে। এই ঘটনার প্রতিবাদে এবং দোষী অধ্যাপকের শাস্তির দাবিতে আগেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চিঠি লিখেছিলেন মেদিনীপুরের আইনজীবীরা। এ বার নাগরিক কনভেনশন ডেকে বিপ্লবীদের অবদান পাঠ্যসূচিতে অন্তর্ভুক্ত করার দাবি জানালেন তাঁরা। রবিবার বিকেলে মেদিনীপুরে কলেজ স্কোয়ারে এই গণকনভেনশন আয়োজিত হয়।
রবিবার বিপ্লবী অনাথ বন্ধু পাঁজা, নির্মল জীবন ঘোষ, বিমল দাশগুপ্ত-সহ বিপ্লবীদের শ্রদ্ধা জানাতে তাঁদের মূর্তিতে মাল্য দান করা হয়। মেদিনীপুর শহরের গোলকুঁয়াচক ও কলেজ স্কোয়ারে বিপ্লবীদের মূর্তিতে মাল্যদানের পাশাপাশি তাঁদের অবদানের কথা তুলে ধরেন অনুষ্ঠানে উপস্থিত বক্তারা। শহরের রাজপথে করা হয় পদযাত্রাও। অত্যাচারী ডিস্ট্রিক্ট ম্যাজিস্ট্রেট জেমস প্যাডি, ডগলাস ও বার্জকে খুন করেছিলেন যে বিপ্লবীরা তাঁদের অবদানের কথা পাঠ্যসূচিতে অন্তর্ভুক্ত করার দাবি জানান এদিন কনভেনশনের মূল উদ্যোক্তা আইনজীবী তীর্থঙ্কর ভকত। এ ছাড়াও এদিন বিপ্লবীদের লড়াইয়ের কথা উঠে আসে পুরপিতা সৌমেন খান, ইতিহাসবিদ অভিজিৎ গুহ প্রমুখের বক্তৃতায়।

ঠিক কী নিয়ে বিতর্কের সূত্রপাত?
সম্প্রতি বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক স্তরে তৃতীয় বর্ষের ষষ্ঠ সেমেস্টার ইতিহাস পরীক্ষার প্রশ্নপত্র প্রকাশ্যে আসে। সেখানে লেখা হয়, ‘মেদিনীপুরের তিনজন জেলা ম্যাজিস্ট্রেট এর নাম কর, যারা সন্ত্রাসবাদীদের দ্বারা নিহত হন?’ ইতিহাস অনার্সের ‘মর্ডান ন্যাশনালিজম ইন ইন্ডিয়া’ পেপার থেকে এই প্রশ্নটি করা হয়। আদতে প্রশ্নপত্রে যাঁদেরকে সন্ত্রাসবাদী হিসেবে আখ্যা দেওয়া হয়েছে, তাঁরা ছিলেন বিপ্লবী। আর যে জেলাশাসকরা নিহত হয়েছিলেন তারা হলেন, অত্যাচারী ডিস্ট্রিক্ট ম্যাজিস্ট্রেট জেমস প্যাডি, ডগলাস ও বার্জ। বিপ্লবী বিমল দাশগুপ্ত, বিপ্লবী জ্যোতিজীবন ঘোষ, বিপ্লবী প্রদ্যোৎ ভট্টাচার্য, অনাথবন্ধু পাঁজা, মৃগেন দত্তরা তিন অত্যাচারী জেলাশাসককে খুন করেছিলেন। মেদিনীপুরের মাটি যেখানে স্বাধীনতা সংগ্রামে এক উজ্জ্বল ভূমিকা পালন করেছিল। সেখানকার বিশ্ববিদ্যালয়ে বিপ্লবীদের ‘সন্ত্রাসবাদী’ আখ্যা দেওয়ায় স্বাভাবিক ভাবে বিতর্ক তৈরি হয়। যার রেশ এখনও চলছে।