Brazil: ডেঙ্গু রুখতে মশার চাষ করছে ব্রাজিল, সুরক্ষিত থাকবেন ১৪ কোটি মানুষ

এই দিনকাল: ডেঙ্গু (Dengue) রুখতে অভিনব পদক্ষেপ ব্রাজিলের (Brazil)। দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রকের উদ্যোগে চাষ করা হচ্ছে কোটি কোটি মশা (Mosquitoes)। বিশ্বের সবচেয়ে বড় জৈব কারখানা গড়ে বিশেষ ধরণের মশার চাষ করা হচ্ছে। এক ধরনের ব্যাকটেরিয়া সংক্রমিত এই মশা আগামী কয়েক বছরে ব্রাজিলে ডেঙ্গুর হাত থেকে প্রায় ১৪ কোটি মানুষকে রক্ষা করবে বলে মনে করা হচ্ছে।

ব্রাজিলের বিশেষ মশা উৎপাদনকারী কারখানার নাম দেওয়া হয়েছে ‘ওলবিতো দো ব্রাজিল’ (Wolbito do Brasil)। দেশটির কুরিতিবা (Curitiba) শহরে গত ১৯ জুলাই আনুষ্ঠানিকভাবে এটি পথচলা শুরু করেছে। বিশ্ব মশা কর্মসূচি, ওসওয়াল্দো ক্রুজ ফাউন্ডেশন (Oswaldo Cruz Foundation) এবং পারানার মলিকুলার বায়োলজি ইনস্টিটিউটের যৌথ উদ্যোগে পরিচালিত হওয়া এই কারখানায় প্রতি সপ্তাহে সর্বোচ্চ ১০ কোটি সংক্রমিত মশার ডিম উৎপাদন করা সম্ভব। বিষয়টি নিয়ে কারখানার লুসিয়ানো মোরেইরা নামের এক আধিকারিক বলেন, আমরা প্রতি ছয় মাসে প্রায় ৭০ লক্ষ মানুষকে সুরক্ষা দিতে পারব।

উল্লেখ্য, ডেঙ্গু ভাইরাস ছড়ানোর পিছনে যে মশা দায়ী, সেটি হল এডিস ইজিপ্টাই (Aedes aegypti)। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা হু-এর তথ্য অনুযায়ী, প্রতিবছর কয়েকশো কোটি মানুষ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হন। শুধু ব্রাজিলে ২০২৪ সালে ডেঙ্গুতে মৃত্যু হয়েছে ৬ হাজার ২৯৭ জনের। 

ডেঙ্গু প্রতিরোধে কী ভাবে কাজ করবে এই মশা?

ওলবিতো দো ব্রাজিল কারখানায় যে মশা উৎপাদন করা  হচ্ছে, সেগুলির দেহে ওলবাকিয়া (Wolbachia) নামের এক ধরনের বিশেষ ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ ঘটানো হয়।এই ব্যাকটেরিয়া মশার দেহের মধ্যে থেকে গিয়ে ডেঙ্গুর ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াই করে। শুধু তাই নয়, জিকা ও চিকুনগুনিয়া ভাইরাসের সংক্রমণও প্রতিরোধ করে এই ব্যাকটেরিয়া। যখন বিশেষ এই মশাগুলো খোলা পরিবেশে ছেড়ে দেওয়া হয়, তখন তারা স্থানীয় মশাদের সঙ্গে প্রজননে অংশ নেয়। বিশেষ ব্যাকটেরিয়া সমন্বিত মশার সঙ্গে প্রজননের ফলে পতঙ্গের পরবর্তী প্রজন্মও ওলবাকিয়া সংক্রমিত হয়। ফলে ভাইরাসের সংক্রমণ বন্ধ হয়ে যায়। ওলবিতো দো ব্রাজিলের আরেক আধিকারিক আন্তোনিও ব্রান্ডাও বলেন, প্রকৃতিতে ৬০ শতাংশের বেশি পোকামাকড়ের দেহে ইতিমধ্যে এই ব্যাকটেরিয়া রয়েছে। মানবদেহের সঙ্গে এর কোনো খারাপ প্রতিক্রিয়া নেই।

প্রসঙ্গত, ২০১৪ সালে ব্রাজিলে প্রথম এই মশার চাষ শুরু করা হয়। প্রথমে আটটি শহরে পরীক্ষামূলকভাবে এই পদ্ধতি চালু করা হয়েছিল। যার ফলে ৫০ লক্ষের বেশি মানুষ ডেঙ্গুর হাত থেকে রক্ষা পেয়েছেন।

Leave a Comment